তিনি বলেন, লজ্জার হাত থেকে বাঁচতে বিএনপি এখন নির্বাচন বর্জনের চেষ্টায় আছে। কেউ যদি ব্যর্থ হয়ে নির্বাচন থেকে সরে যেতে চায় তাহলে কারো কিছু বলার থাকবে না। সুস্থ্য রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসতে হলে বিএনপিকে এ ব্যর্থতা মেনে নিতে হবে।
শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হানিফ এসব কথা বলেন। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার দিবস পালন সফল করার জন্য আয়োজিত এক যৌথ সভা শেষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘আমাদের সাংবাদিক ভাইদের একটা স্বভাব আছে, কিছু হলেই তারা বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে যায়। আর তখনই তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে ভারতের কোন সাংবাদিক কি প্রভাবশালী কোন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে? আমার জানামতে কেউ এটা করে না। কিন্তু আমাদের মধ্যে এ প্রবণতাটা বেশি, কোন কিছু হলেই আমরা বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে দৌড়ে চলে যাই। কেন? এ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
নির্বাচনের সহিসংতা নিয়ে তিনি বলেন, আজকে গোটা বিশ্বে রাজনৈতিক-সামজিক নানা ধরণের অস্থিরতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত হত্যার ঘটনা ঘটছে, এর মানে কি সেদেশের সরকার ব্যর্থ?
হানিফ বলেন, আমরা এ ধরণের সহিংসতা চাই না। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে এখানে প্রতিটি জনগণ ও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও বর্জনের অধিকার আছে। সে হিসেবে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে কেউই।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের কথা ভাবছে কেন? কারণ ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমলে দু:শাসনের কারণে জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
হানিফ বলেন, ২০০৯ সালের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করায় জনগণ তাদের সঙ্গ ত্যাগ করেছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের কারণে বর্তমানে জনগণ আমাদের প্রতি আস্থাশীল। যুক্তরাষ্ট্রের একটি জরিপেও দেখা গেছে যে ৮০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার সরকারের সুশাসনের প্রতি আস্থাশীল। ভোটে তো তার প্রতিফলন ঘটবে এটাই স্বাভাবিক।
এর আগে ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, আইন বিষয় সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কার্যনির্বাহী সদস্য এনামুল হক শামীম, আমিনুল ইসলাম আমিন, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
সভা শেষে হানিফ সাংবাদিকদের কাছে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ৭টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হবে।