সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: সরকারি নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে অন্তত ছয়টি সমবায় প্রতিষ্ঠান তাদের নামের সঙ্গে ‘ব্যাংক’ শব্দ যুক্ত করে সংগ্রহ করছে আমানত। খুলছে একের পর এক শাখা। সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছে তারা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি কমিটি এসব বন্ধে পথ খুঁজছে।
তফসিলি ব্যাংকের মতো খোলা হচ্ছে সাধারণ সঞ্চয় ও চলতি হিসাব। সংগ্রহ করা হচ্ছে মেয়াদি আমানতও। ব্যাংক না হলেও প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ‘ব্যাংক’ শব্দটি। মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ নামক সমবায় প্রতিষ্ঠান এসব তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও। সমবায় প্রতিষ্ঠান হয়েও নামের সঙ্গে ‘ব্যাংক’ শব্দ যুক্ত করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ‘আজিজ কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’। অনিয়ম ও দুর্নীতিতে এরই মধ্যে ডুবেছে এই প্রতিষ্ঠান। বন্ধ হয়ে গেছে কার্যক্রম। টাকা না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে শত শত গ্রাহক। ব্যাংক শব্দই যেন গ্রাহক টানার অস্ত্র। ব্যাংক না হলেও তাই নামের সঙ্গে তাই শব্দটি জুড়ে দেয়ার প্রবণতা। আবার অনেকে সমবায়, এনজিও, অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান খুলে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করছে। তারপর এক সময় এসব প্রতিষ্ঠান হয়ে যাচ্ছে লাপাত্তা।
সন্দেজনক লেনদেন, অর্থ সংগ্রহ এবং অস্পষ্ট ব্যবসা বন্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যায়, তার জন্য কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সুপারিশ আকারে আদালতে প্রতিবেদন পাঠাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন কমিটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে জানান, ‘অবৈধ এবং সন্দেহজনক লেনদেন বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক নানা সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আইনগত পদক্ষেপ ছাড়াও সাধারণ মানুষের সতর্ক হতেও প্রচারণা চালানো হয়। তবে, এবার সুনির্দিষ্ট করে পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হবে। এ ক্ষেত্রে আইনের নির্দিষ্ট ধারা পরিপালনের কথাও তুলে ধরা হবে।বাংলাদেশ ইনস্টিটউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট, বিআইবিএম-এর সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ব্যাংক কোম্পানি অ্যাক্টে ব্যাংক না হয়েও ব্যাংক শব্দ যুক্ত করে কার্যক্রম পরিচালনা করলে শাস্তির বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। তবে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসব বিষয়ে কঠোর তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয় না। বন্ধের ক্ষেত্রে সদিচ্ছা থাকা জরুরি।’
বিআইবিএম-এর সাবেক ডিজি ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘অর্থ তছরুপ হচ্ছে, ব্যাংক শব্দ যুক্ত করে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে – অথচ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করলে নিজেরাই ব্যবস্থা নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে আইন-শৃংখলা বাহিনীর হস্তক্ষেপও চাইতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
বিএ/১৮ ডিসেম্বর