সিলেট৭১নিউজ প্রতিবেদক:শেখ হাসিনা পরিষদ নামের একটি সংগঠন নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে সিলেটে। ওই পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জাহিদ হোসেনের উপর নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনটির নাম বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ। গেল ২৭ মার্চ এই সংগঠনের কমিটি দেওয়া হয় সিলেটে। অনুমোদনকৃত সিলেট জেলা কমিটিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে নাম লেখা রয়েছে জনৈক মনির খানের। আর কার্যকরী সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম উল্লেখ রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মহাপরিচালক ড. মাহামুদুর রহমান। সিলেট জেলা কমিটির এই প্যাডে স্বাক্ষর রয়েছে সংগঠনের উপ-দপ্তর সম্পাদকের। নাম মো. জাহাঙ্গির আলম। কেন্দ্র স্বাক্ষরিত সিলেট জেলা কমিটিতে ৫ বছর মেয়াদী সভাপতি হিসেবে নারী উদ্যোক্তা হাসনা হেনা খানম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হাজেরা খাতুনকে দায়িত্ব প্রদান করে সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল করার আহবান জানানো হয়।
সিলেট জেলা কমিটি অনুমোদনের দেড় মাসের মাথায় হঠাৎ করেই এই কমিটি অবৈধ ঘোষণা করে জেলা সভাপতি হিসেবে নাম উঠে আসে ফারজানা চৌধুরীর। সাধারণ সম্পাদক স্বপদে বহাল থাকেন। কিন্তু বিষয়টি জানেন না কেন্দ্র অনুমোদিত জেলা কমিটির সভাপতি হাসনা হেনা খানম। কেন্দ্র থেকে এ ব্যাপারে কোনও নোটিশও তিনি পাননি। তিনি বলেন, ৫ বছর মেয়াদী কমিটি কিভাবে অবৈধ হয়ে যায়,তা বোধোগম্য নয়। তিনি বলেন, সিলেটের সবজী বিক্রেতা জাহিদ হাসান নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়ে বারবার চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা প্রদান করতে না পারায় তিনি হাসনা হেনাকে অবৈধ ঘোষণা করে নতুন সভাপতি দিয়ে থাকতে পারেন, তবে সেটি হবে পুরোই অবৈধ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাছাড়া, টাকা প্রদান করতে না করায় হাসনা হেনাকে ভয়-ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করেন জাহিদ হাসান নামের ওই ব্যক্তি। ভয়-ভীতি এবং চাঁদা চাওয়ার অডিও রেকর্ডও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এদিকে, জাহিদ হোসেনের ব্যাপারে তথ্য খোঁজতে গিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানাগেছে, নারী লোভী ওই জাহিদ হোসেন ঢাকায় এক নারীর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেন। এর পর ওই মহিলাকে বিয়ে করবেন বলে ঢাকায় একটি বাসা ভাড়া করে মহিলার সাথে রাত যাপন করেন। এর আগে গেল ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ফকিরাপুলের একটি হোটেলেও মহিলাকে নিয়ে দুই রাত কাটান। নিজেকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী উল্লেখ করে মহিলার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলেও বিয়ে করেন নি ওই মহিলাকে। বিয়ের কথা বলার পর থেকে মুক্তিযোদ্ধার কন্যা ওই নারীর সাথে সকল সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেন লম্পট জাহিদ হাসান। বর্তমানেও ওই মহিলাকে মুখ না খোলার জন্য ফোনে ভয়-ভীতি ও হুমকী দিয়ে যাচ্ছেন। ওই মহিলার সাথে প্রতিবেদকের কথোপকতনের কলরেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে। তাছাড়া, প্রতারক জাহিদ হাসানের উপর দক্ষিণ সুরমা থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। নিজে সামান্য একজন সব্জি বিক্রেতা হলেও জাহিদ হাসান বিভিন্ন স্থানে নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা বলে পরিচয় প্রদান করেন।
এদিকে হাসনা হেনার সাথে চাঁদাবাজির বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জাহিদ হাসানের সাথে। তিনি অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন,হাসনা হেনা খানমের প্রতি টাকার মাধ্যমে সদস্য পদে অন্তর্ভূক্তি করার অভিযোগ রয়েছে। তবে কার কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন এমন তথ্য জানাতে পারেন নি তিনি।
এ বিষয়ে হাসনা হেনা বলেন, সিলেটের একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আমার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু উল্লেখিত জাহিদ হাসান-আমার কাছ থেকে নিজের আখের গোছাতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে শিঘ্রই মামলার প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন বলে প্রতিবেদকের কাছে জানিয়েছেন।