আজ মঙ্গলবার দুপুরে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখতে সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন সংস্থাটির দুই সদস্য। তারা হলেন-শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে এবং বেসরকারি কোম্পানি ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের সহযোগিতায় ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর’ এই প্রতিকৃতি তৈরির কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ বলেছেন, প্রতিকৃতি তৈরিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সব শর্তই পূরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দুই জাতের ধানের চারায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে লন্ডনস্থ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। আর সাতদিনের মধ্যেই ফল জানা যাবে।
প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালে চীনে তৈরি শস্যচিত্রটির আয়তন ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট। আর শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির আয়তন ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট। এর দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার এবং প্রস্থ ৩০০ মিটার, যা হবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র। এছাড়া শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি তৈরির জন্য দুই ধরনের ধানের চারা লাগানো হয়েছে। যার মাধ্যমে জাতির পিতার সুস্পষ্ট অবয়ব ফুটে উঠেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতির পিতার এই চিত্রকর্ম আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘শস্যচিত্র’ হিসেবে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জন্য নতুন ইতিহাস তৈরি করবে। সেই অপেক্ষার প্রহর গুণছেন গোটা বাঙালি জাতি। মাঠে দুই ধরনের ধানের চারা রোপণের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে আঁকা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, যা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিরলসভাবে কাজ করছেন। তাদের কেউ আগাছা পরিস্কারে ব্যস্ত, আবার কেউ ব্যস্ত সেচ দেওয়ার কাজে। ইতিমধ্যে শস্যচিত্রে ভেসে উঠেছে জাতির পিতার অবয়ব। তবে খালি চোখে শস্যচিত্রটির পূর্ণাঙ্গ রুপ দেখা সম্ভব না হলেও একশ’ বিঘা জমিতে রোপণকৃত ধানের দৃশ্যে ড্রোনে ধরা পড়ছে জাতির পিতার শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই শস্যচিত্রটি দেখতে স্থানীয়দের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা অনেকেই ভীড় করছেন।
গত ২৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ও উচ্চ ফলনশীল দুই ধরণের ধানের চারা রোপনের মাধ্যমে এই কর্মযজ্ঞের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহ্বাযক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এতে সভাপতিত্ব করেন।
আজ বেলা ১টা থেকে বিকাল ৪ পর্যন্ত বালেন্দা গ্রামের ওই শস্যচিত্র পরিদর্শন করেন পরিষদের আহ্বাযক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং পরিষদের সদস্য সচিব ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজার রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাস্বেবক লীগের সহসভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেুবুল আহসান রিপু প্রমুখ।
কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষক শ্রমিকের নেতা। এই শস্যচিত্রের মাধ্যমে তাকে জানতে পারবে সারা বিশ্ব। বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নয়, তিনি সারা বিশ্বের নির্যাতিত ও নিপীড়িত জনগণের নেতা। তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হানিার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর এই চিত্রকর্মটি দেশের ১৭ কেটি মানুষকে জাগ্রত করে তুলবে।
জানা গেছে, শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি তৈরি করার জন্য গাঢ় বেগুণী ও সোনালী রংয়ের ধান বেছে নেওয়া হয়। চীন থেকে এই ধানের জাত আমদানি করা হয়েছে। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন শ্রমিক শস্যচিত্রের পরিচর্যা করছেন। এর আগে ১৫০ জন শ্রমিক এই চারা রোপণ করেন।