এসবিএন ডেস্ক:
নভেম্বরে ভারতে রফতানি কমেছে। এ নিয়ে টানা ১২ মাস সংকুচিত হলো দেশটির রফতানি। এতে বোঝা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হ্রাসমান চাহিদা ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারেও প্রভাব ফেলছে। সর্বশেষ উপাত্ত দেখে ভারতের প্রকৌশল খাতের রফতানির অস্তিত্ব নিয়ে সংশ্লিষ্টরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। খবর ইকোনমিক টাইমস।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, নভেম্বরে রফতানি ২৪ শতাংশ কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। গত বছরের একই সময়ে রফতানি ছিল ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। নভেম্বরে আমদানি ৩০ শতাংশ কমে ২৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা এক বছর আগে ছিল ৪২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। অপরিশোধিত জ্বালানির নিম্নমূল্যের পাশাপাশি স্বর্ণ, কয়লা ও সার আমদানি হ্রাস পাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য আমদানি-রফতানি দুটিই সংকুচিত হওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার থেকে ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে।
নভেম্বরে রফতানির পতন বিগত কয়েক বছরের তুলনায় খুব বেশি বলে উল্লেখ করেছেন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের (এফআইইও) প্রেসিডেন্ট এসসি রালহান। বর্তমান ধারা অনুযায়ী, চলতি বছরের শেষ নাগাদ মোট ২৬০ বিলিয়ন থেকে ২৭০ বিলিয়ন ডলার রফতানির আশা করছে ভারত।
অবশ্য রফতানি হ্রাসের এ ধারাকে খুব একটা উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছেন না ভারতের ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা আইসিআর এর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ার। তিনি বলেন, নভেম্বরে অনেকগুলো উৎসবের দিন ছিল। অন্য মাসের তুলনায় কর্মদিবসের সংখ্যাও ছিল কম। এ কারণেই রফতানি তুলনামূলক কম হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রফতানির পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সতর্ক হতে পারি তবে উদ্বিগ্ন হওয়া যাবে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাহিদা হ্রাস, রুপির অতিমূল্যায়ন, চীনে আমদানি কমে যাওয়া ও ইউয়ানের অবমূল্যায়নের কারণে ভারতের রফতানি বাড়ছে না। যদিও রফতানি বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পণ্য ও প্রণোদনামূলক স্কিম চালু করেছে।
এদিকে ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল (ইইপিসি) চেয়ারম্যান টি এস ভাসিন বলেছেন, যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ রফতানি বৃদ্ধির পরিবর্তে কমেছে। ফলে এ খাতে রফতানি টিকে থাকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, সরকার ইস্পাত আমদানি বন্ধ করায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ভুগেছেন।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ভারতে ১৭৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্যদ্রব্য রফতানি হয়েছে, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ২১৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।