সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দল বেঁধে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল বুধবারও কলেজে অবস্থান করেছেন।

এসময় কমিটির সদস্যরা ভিকটিমের স্বামী, শাহপরান (রহ.) থানার ওসি, কলেজ প্রশাসনসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য গ্রহণ করেন। পরে তারা কলেজ ক্যাম্পাসসহ হোস্টেলের বিভিন্ন অংশ আবারো পরিদর্শন করেন। দিনভর ব্যস্ততা শেষে রাতে তারা ঢাকা ফিরে যান। আজ বৃহস্পতিবার তারা মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিবেন বলে জানানো হয়েছে।

তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার পূর্বে প্রয়োজনে তারা আবারো এমসি কলেজে আসবেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) শাহেদুল খবির চৌধুরী ।

আগের দিন মঙ্গলবার থেকে তদন্ত কমিটি এমসি কলেজে কাজ শুরু করে।
জানা যায়, গতকাল সকালে তদন্ত দল এমসি কলেজে যান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা শাহপরান (রহ.) থানার ওসি কাইয়ুম চৌধুরীর বক্তব্য গ্রহণ করেন। প্রায় ৩০মিনিট ওসির বক্তব্য গ্রহণ করেন তদন্ত দল। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তদন্ত দল ভিকটিমের স্বামীর বক্তব্য নেন। এসময় তারা প্রায় ৩০ মিনিট তার সাথে কথা বলেন। বিকেলে কলেজে প্রেস ব্রিফিং-এ তদন্ত কমিটির প্রধান শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, তদন্ত কমিটি কলেজ প্রশাসন, ভিকটিম নারী ও তার স্বামী ও পুলিশের সাথেও কথা বলেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিবে। হোস্টেলের কক্ষে অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টিও তারা অবগত আছেন এবং বিষয়টি প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকবে বলে জানান তিনি। এ সময় তিনি বলেন, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। এছাড়াও অপ্রতুল সীমানা প্রাচীর, আলোর স্বল্পতার কারণেও নিরাপত্তার ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানান তিনি। ব্রিফিং-এ তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর মো. নুরে আলম ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক লোকমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
পরে তদন্ত কমিটি সন্ধ্যার দিকে আবারো কলেজ হোস্টেলের ঘটনাস্থলে যান। এসময় তারা ঘটনাস্থলসহ হোস্টেলের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। হোস্টেলের যে স্থান থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে সেই স্থান দ্বিতীয়বার পরিদর্শন করেন। পরে কলেজে ফিরে এসে আবারো তদন্ত কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। রাতে বিমানযোগে সিলেট ত্যাগ করেন তারা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক প্রতাপ চৌধুরী জানান, এমসি কলেজের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও সদস্যসচিব রাতে ঢাকা ফিরে গেছেন। তবে প্রয়োজনে তারা আবারো সিলেট আসবেন।
উল্লেখ্য, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসা দম্পতির স্বামীকে আটকে রেখে গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলেজ ছাত্রাবাসে নববধূকে ধর্ষণ করে কয়েকজন যুবক। এ ঘটনায় ৬ ছাত্রলীগ কর্মীর নামোল্লেখসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই গৃহবধূর স্বামী। পুলিশ এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে ৬ জন মামলার এজাহারনামীয় আসামী। দ্ইুজনকে সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ এ পর্যন্ত ৬ জনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।