ডিএইচ মামুন: সিলেটে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। শ্রমিক সংগঠন কর্তৃক বিভিন্ন রুটের ভাড়া নির্ধারিত থাকলেও করোনা মহামারির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত লকডাউন, স্বাস্থ্যবিধিসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে খেয়াল খুশি মত ভাড়া আদায় করছে সিলেট জেলার বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী সিএনজি চালকরা। তাদের এ দৌরাত্ম অব্যাহত থাকলেও প্রশাসন এ ব্যাপারে সম্পূর্ন নিরব। ফলে সিএনজি চালকদের কাছে যাত্রীসাধারণ অসহায় হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, সিলেট নগরীর ক্বীনব্রীজ মোড় হতে চন্ডিপুল ভাড়া ছিল ৫টাকা এখন ১০টাকা, তেতলী ভাড়া ছিল ১০টাকা এখন ১৫টাকা, লালাবাজারের ভাড়া ছিল ১৫ টাকা এখন ২০টাকা, রশিদপুর ভাড়া ছিল ২০ টাকা এখন ২৫/৩০টাকা, বিশ্বনাথের ভাড়া ছিল ২৫ টাকা এখন ৪০টাকা, বিশ্বনাথ নতুন বাজার মাছ হাটা থেকে মিরেরচর ভাড়া ছিল ১০ টাকা এখন ২০ টাকা।
ক্বীনব্্রীজ মোড় থেকে মোগলাবাজার ভাড়া ছিল ১৫টাকা এখন ৩০টাকা, শিববাড়ী ভাড়া ছিল ৫টাকা এখন ১০/১৫টাকা।
বাবনা মোড় হতে কামাল বাজার ভাড়া ছিল ১৫টাকা এখন ২৫টাকা, স্টেশন রোড থেকে বলদীর ভাড়া ছিল ১০টাকা এখন ২৫টাকা, সিলাম চকের বাজারের ভাড়া ছিল ৫টাকা এখন ১০/১৫টাকা,
সিলেট নগরীর কুমারগাও বাসস্ট্যান্ড থেকে মধুশহীদ এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া কিছুদিন আগেও ছিলো সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, এখন সেখানে দিতে হয় ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা।
সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকার বাসিন্দা তয়মুছ আলী বলেন, অটোরিকশার চালকেরা ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করে। সিলেট নগরীর বন্দরবাজার থেকে টিলাগড় সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া কখনও ৮০ টাকা আবার কখনও ১৩০ টাকাও নেন চালকরা।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক সেবুল মিয়া বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে মানুষের যাতায়াত কম হলেও প্রতিদিন গাড়ী মালিকের ভাড়া ও গ্যাস খরচ সংকুলান করতে কিছু ভাড়া বেশি নিতে হয়।
সদর দক্ষিণ নাগরিক কমিটির প্রতিষ্টাতা সদস্য সচিব, সাংবাদিক চঞ্চল মাহমুদ ফুলর বলেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় সিলেটে চলছে এই ভাড়া নৈরাজ্য। এ কারণে যাত্রী হয়রানি ব্যাপক হারে বাড়ছে । যানবাহন নিয়ন্ত্রন বিধি অনুযায়ী প্রতিটি অটোরিকশায় সর্বোচ্চ ৩জন যাত্রী বহনের বিধান রয়েছে। কিন্তু সিলেটের চিত্র সম্পুর্ণ বিপরীত। অটোরিকশা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তিদের ম্যানেজের মাধ্যমে এই নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানান।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার ফয়সল মাহমুদ বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কোন অবস্থাতে সমীচিন নয়, জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিলেট জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন (৭০৭) এর সভাপতি মোঃ জাকারিয়া বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে আমরা অবগত নয়। সরকারী নিদেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে ৫জনের স্থলে ৩জনকে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়। এক্ষেত্রে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া প্রদান অনাকাংখিত নয়। তবে যেসব সিএনজি চালক এসব নিদের্শনা ভঙ্গ করছে তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।