দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধি:: দক্ষিণ সুরমায় ইদানিং অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধ গোটা উপজেলার অধিবাসীদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি করেছে। প্রচন্ড এ শীতে রাতের বেলা গণকোয়াশার কারনে একটু রাত হলেই স্থানীয় জনগন ঘুমিয়ে পড়ে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অপরাধিরা বিভিন্ন অপকর্ম ঘটিয়ে যাচ্ছে। চুরি ডাকাতির পাশাপাশি মাদক ও চোরাচালান ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেলেও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের একাধিক স্থানে গরুর গাড়ী আটকাতে রাতভর জেগে থাকে। দীর্ঘদিন যাবত এসব কর্মযজ্ঞ চলতে থাকায় জনমনে এ নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে এবং তাদের জানমাল রক্ষায় ভীতির সঞ্চার হয়েছে।
উপজেলা ঘুরে জানা যায়,গত এক সপ্তাহে উপজেলার জালালপুর, লালাবাজার, মোগলাবাজার, তেতলী ও বরইকান্দি ইউনিয়নের একাধিক স্থানে কয়েকটি চুরি,ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার ভোররাতে দক্ষিণ সুরমার কদমতলী চত্ত¡রস্থ নেওয়া কর্ণারে অবস্থিত মেসার্স মোনায়েম খান বাবুল এর স্বত্তাধিকারী, সিলেটের প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী তেতলী ইউনিয়নের ভালকী গ্রামের বাসিন্দা মোনায়েম খান বাবুল এর বাড়িতে দুর্র্ধষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা নগদ ৯৫হাজার টাকাসহ, প্রায়১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৩টি মোবাইল ফোনসহ সর্বমোট ৯লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে।
দেখা যায় প্রতিদিন সন্ধা হলেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চন্ডিপুল, তেতলী, অতিরবাড়ী, লালারগাও এলাকার রাস্তার পাশে পেট্রল ডিউটির নামে গরুর গাড়ী আটকিয়ে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের একাধিক টহল টিম টাকা উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে উঠে। অথচ থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে চুরি,ডাকাতির পাশাপাশি মাদক ব্যবসা, জুয়া, তীর খেলা সহ অপরাধ কর্মকান্ড প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। গডফাডাররা পুলিশকে ম্যানেজ করে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মুজিব বর্ষে পুলিশ হবে জনতার ¯েøাগান নিয়ে পুলিশ বাহিনী চলার কথা, সেখানে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ পুরোদমে বিপরীত। পুলিশ যেখানে অপরাধী সনাক্ত করার কথা সেখানে অপরাধীদের সাথে রয়েছে গভীর সখ্যতা। এর ফলে অপরাধীরা আবারও মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে চন্ডিপুল, লালাবাজার, নাজিরবাজার এলাকায় মাদকসেবী ও তীর খেলোয়াররা আবারো জেগে উঠেছে।
ডাকাতির শিকার ব্যবসায়ী মোনায়েম খান বাবুল জানান, ২৭জানুয়ারী সোমবার রাত ২টার দিকে আমার বাড়ির পাহাদার আবুল কালাম আজাদকে হাত, পা ও মুখ বেধে রেখে বাড়ির মূল দরজা ভেঙ্গে ১০-১৫ জন ডাকাত ঘরে প্রবেশ করে। প্রথমেই ডাকাত সদস্যরা হানা দেয় মেজো ছেলে ইব্ররাহিম আল সামুন এর রুমে। তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার দু’হাত পিছন দিক থেকে বেধে এবং আমার রুমে প্রবেশ করে আমাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার ঘরে লুটপাট চালায়। আমার স্ত্রী প্রাণভয়ে ঘরের সব চাবী তাদের হাতে দিয়ে দেন। তারা চাবী নিয়ে আমার শোয়ার ঘরসহ সবকটি রুমে প্রবেশ করে আলমারী ও ওয়াড্রপে রক্ষিত নগদ ৯৫হাজার টাকা (বিভিন্ন দেশের ডলার, রিয়াল, পাউন্ডসহ) সহ প্রায় পনের ভরি স্বর্ণালঙ্কার, তিনটি মোবাইল সেট নিয়ে যায়।
তিনি জানান- ডাকাতরা মালামাল লুটে কার যোগে পালিয়ে যায়। তাদের আর্তচিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে উদ্ধার করেন এবং পাহারাদার আবুল কালাম আজাদকে বাড়ীর পূর্ব দিকের নদীর পাড়ে হাত, পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এম,এ,জি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খায়রুল ফজল জানান, দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় অপরাধ প্রবণতা রোধে থানা পুলিশ সব সময় সক্রিয় রয়েছে। বিশেষ করে ভালকীতে সংঘটিত ডাকাতির ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ বেশ তৎপর। ইতিমধ্যে এসএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং এর সাথে জড়িতদের খোজে বের করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা আলাপকালে জানান, গরুর গাড়ী আটকিয়ে টাকা আদায় ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতিতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না। জনগনের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সবসময় সক্রিয় ছিল এবং আছে।