চাউল, পিঁয়াজের চরম উর্ধ্বগতি প্রতিবাদে ও দ্রব্যমূল্য দ্রুত কমানো কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও দুর্নীতি এবং গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম পূর্ব ঘোষিত গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় সিলেট সিটি পয়েন্টে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। গণজমায়েত শেষে এক বিরাট বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলে দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে উঠে। শ্লোগান উঠে চাউল পিঁয়াজের দাম বাড়লো কেন, বাণিজ্য মন্ত্রীর জবাব চাই, ধারণাহীন বাণিজ্য মন্ত্রী দেশবাসী মানে না, মানে না।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, চাউল পিঁয়াজের চরম উর্ধ্বগতি ও দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ার ফলে দেশের জনগণের জীবন যাত্রা দুর্বিষহ ও নাবিশ্বাস হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি গুজব সৃষ্টি করে এক শ্রেণীর দুর্বৃত্ত বাজারসহ দেশের শান্তিময় পরিবেশকে অশান্ত করার চক্রান্তে লিপ্ত। এই সমস্ত চক্রান্তে সাধারণ মানুষই খুব বেশী নির্যাতিত ও জর্জরিত হচ্ছেন। জনগণ সব সময় আতঙ্কের মধ্যে আছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশ বাণিজ্য মন্ত্রী, পিঁয়াজের মূল্যের ব্যাপারে বলেছেন, পিঁয়াজের দাম এতো বৃদ্ধি হবে তা ছিল তার ধারণা বাহিরে। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসে এই ধরনের বক্তব্য জাতিকে খুবই চিন্তায় ফেলেছে। ধারণাহীন ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে এই ধরনের ব্যক্তি দায়িত্ব থাকা কতটুকু যুক্তিযুক্ত। বাজারের এই অবস্থার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রীর পদত্যাগ বা প্রত্যাহার করা উচিত বলে সচেতন জনগণ মনে করেন।
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন রশীদ এডভোকেট, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহিদুর রহমান ঝুনু, আমীরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য রুস্তুম আলম কুদ্দুছ, কয়েছ আহমদ সাগর, কেন্দ্রীয় নেতা মানবাধিকার কর্মী সৈয়দ আকরাম আল শাহান, দক্ষিণ সুরমা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শিতাব, হেফাজত ইসলামের সিলেটের নেতা মাওলানা মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, যুব ফোরামের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তাদির কিবরিয়া সিরাজী, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আমীন তাহমিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম দিদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়াজ কুদ্দুছ খান, সমাজসেবী সালাহ উদ্দিন রিমন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মকসুদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং আপনারই চৌকস নেতৃত্বে বাংলাদেশ তিনবিঘা করিডোরসহ কয়েকটি সীটমহল পেয়েছে, সমুদ্র বিজয় করেছে, ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন হয়েছে, রেল মন্ত্রণালয় হয়েছে, উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা দূর হয়েছে, দেশ রোল মডেলের দিকে যাচ্ছে ঠিক তখনই দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধ্বগতি ও দুর্নীতি বিরোধী অভিযান নস্যাৎ করার চক্রান্ত ও আপনার জনপ্রিয়তাকে খাটো করার জন্য একটি মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে কি না তা এখন ভাবনার বিষয়। অন্যদিকে এক শ্রেণীর দুর্বৃত্ত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ বাজার নিয়ে অস্থিরতা ও বিভিন্ন ধরনের গুজব সৃষ্টি করছে। যার ফলে এর প্রভাব পড়ছে জীবন যাত্রায় পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করছে। এই গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ডায়রেক্ট এ্যাকশন দেশবাসী দেখতে চায়।
চাউল ও পিঁয়াজসহ দ্রব্যমূল্য অবিলম্বে কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি দুর্নীতি, ফেইসবুকের মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি ও রটনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আপনাকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার জন্য জোর দাবী জানান।