June 30, 2025, 10:04 pm

সংবাদ শিরোনাম :
সিলেট মহানগরীর ১৪নং ওয়ার্ডে তালামীয ইসলামিয়ার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সাংবাদিকের উপরে মিথ্যা মামলা কোম্পানীগঞ্জে ফ্যাসিস্টের দোসরদের পুণর্বাসন নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে বিএনপি নেতার উপর হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার শুরু কুলাউড়ায় বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশির লাশ তুলে নিল ভারত মাহি-শাবাব হত্যার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি যুক্তরাজ্যে ছবি ভাইরাল: নবীগঞ্জে ওয়ালিদের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ কুলাউড়া সীমান্তে আবারও পুশইন, ১৪ জন আটক ওসমানী হাসপাতালে সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ সিলেট সীমান্তে নারী-শিশুসহ ১৬ জনকে আটক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সাবেক এমপি ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে ছাত্রশিবিরের কোরআন কুইজে হিন্দু শিক্ষার্থীর বিজয় সারা দেশে গণজমায়েতের ডাক এনসিপির প্রতিটি রক্তবিন্দুর প্রতিশোধ নেয়া হবে: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি শেষ, রায় ২৭ মে এম.সি কলেজ তালামীযের কাউন্সিল সম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা মিজানকে জড়িয়ে অপপ্রচারের নিন্দা ও হুমকিদাতাকে গ্রেফতারের দাবি সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে বাংলাদেশী নিহত দিরাইয়ে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৬ ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত কৃষকদের কথা সবার চিন্তা করতে হবে – সুনামগঞ্জে কৃষি উপদেষ্টা শাবিতে ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম তামাবিল দিয়ে ১৪ বাংলাদেশিকে ফেরত দিলো ভারত এসএসসি পরীক্ষা > সিলেট বোর্ডে অংশ নিচ্ছে ১ লাখ ২ হাজার ৮৭২ জন পরীক্ষার্থী বড়লেখায় মসজিদের ভূমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১০ : ৭ জনের নামে থানায় মামলা বড়লেখা উপজেলাসহ দেশ ও প্রবাসীদের ঈদের শুভেচছা জানিয়েছেন জননেতা সাইদুল ইসলাম রহমানীয়ায় দারুল কিরাতের বিদায়ী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ বড়লেখায়  যুবদল নেতা নুরুল তাপাদারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কুলাউড়ায় বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটের অভিযোগ আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে, এমনটাই আশাবাদ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির গাড়ি চালকের শতকোটি টাকা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির গাড়ি চালকের শতকোটি টাকা

Please Share This Post in Your Social Media

অনলাইন ডেস্ক : তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আব্দুল মালেক ওরফে বাদল (৬৩)। পেশায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক। সর্বশেষ চালাতেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে বরাদ্দ করা সরকারি গাড়ি। অধিদপ্তরের অপর দুটি গাড়ির একটি দিয়ে নিজের গরুর খামারের দুধ বিক্রি করেন, অন্যটিতে চড়তেন তার পরিবারের সদস্যরা।

ঢাকায় রয়েছে তার কাঠায় কাঠায় জমি, একাধিক বহুতল বাড়ি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। ডেইরি ফার্মসহ বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি আছে কোটি কোটি টাকা। ব্যাংকেও আছে নামে-বেনামে টাকা। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যের এই গাড়িচালকের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকার বেশি। অবৈধ সম্পদ গড়তে গিয়ে অনিয়ম-অপকর্মে তিনি যেন ছাড়িয়ে গেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত-সমালোচিত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনকেও। স্বাস্থ্যের এই ‘নয়া আবজাল’ টাকা পাচার করেছেন বিদেশেও।

গতকাল রোববার র‌্যাব-১-এর একটি দল চালক মালেককে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। অবশ্য এর আগেই তার অপকর্ম আর সম্পদের অনুসন্ধান চালাতে শুরু করেছিলেন গোয়েন্দারা। সেখানে মালেকের যে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে বিস্মিত সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা। একজন গাড়িচালকের বেতনই বা কত? কিন্তু তিনি সেই সামান্য চাকরি করেই সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। গাড়িচালক পরিচয়েই টাকার কুমির বনে গেছেন মালেক।

জানতে চাইলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে মালেকের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকার বেশি। নামে-বেনামে আরও কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বলেন, চার বছর ধরে মালেক আমার চালক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। তবে কখনও তার অনিয়ম বা কোনো দুর্নীতির ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। আমার কানেও আসেনি। এর আগে সে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেকজন ডিজির গাড়ি চালিয়েছিল।

তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর দেশজুড়ে ক্যাসিনোসহ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে শুদ্ধি অপারেশন শুরু করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কয়েক মাস ধরে ওই অভিযান স্থবির ছিল। স্বাস্থ্যের মালেকের গ্রেপ্তারের বিষয়টি দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ। শিগগির এ ধরনের আরও কয়েকজন গ্রেপ্তার হতে পারেন।

কীভাবে এত কিছুর মালিক হলেন এই ক্ষুদ্র কর্মচারী- সে অনুসন্ধানেও বিস্মিত হতে হবে সবাইকে। তিনি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও প্রভাবশালী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে। ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন খুলে তিনি এর সভাপতি হয়েছেন। সেই পদের দাপট দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলেছিলেন পুরো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে। নিয়োগ-বদলি থেকে শুরু করে পদোন্নতিও হতো তার অফিস থেকেই!

জানা যায়, অষ্টম শ্রেণি পাস মালেক ১৯৮২ সালে সাভারে একটি স্বাস্থ্য প্রকল্পে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন। দুই বছর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে তার চাকরি স্থায়ী হয়। এরপর তিনি প্রেষণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরে গাড়িচালক হিসেবে বদলি হন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত কাগজে-কলমে সেখানেই তিনি গাড়িচালক ছিলেন। এর আগে মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের গাড়ির চালকও ছিলেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আগামী ২২ অক্টোবর মালেককে তলব করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে দুদকের হাজিরা দেওয়ার আগেই র‌্যাবের হাতে ধরা পড়লেন তিনি।

যত সম্পদ: ধর্মের লেবাস নিয়ে চলাফেরা করতেন আব্দুল মালেক। বিয়ে করেছেন দুটি। প্রথম স্ত্রী নার্গিস আক্তারের নামে তুরাগের দক্ষিণ কামারপাড়ায় রমজান মার্কেটের উত্তর পাশে ছয় কাঠা জায়গার ওপর সাততলা দুটি আবাসিক ভবন তৈরি করেছেন, যার নাম ‘হাজী কমপ্লেক্স’। এ দুটি ভবনে ২৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর একটি ভবনের তৃতীয় তলার এক আলিশান ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। বাকি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দিয়েছেন।

র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে, এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মালেকের আরও ১০ থেকে ১২ কাঠা জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে ধানমন্ডি মৌজার হাতিরপুল এলাকায় সাড়ে চার কাঠা জমিতে ১০ তলা ভবন নির্মাণাধীন। তার বড় মেয়ে বেবীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়া এলাকায় ১৫ কাঠা জায়গার ওপর ‘ইমন ডেইরি ফার্ম’ নামে একটি গরুর খামার রয়েছে। সেখানে অন্তত ৫০টি বাছুরসহ গাভি রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেন তার ‘পারিবারিক প্রতিষ্ঠান’। তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, গাড়িচালক মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পদে লোকজনকে চাকরি দিয়েছেন। তাকে অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তারা সহায়তা করেছেন। তার ওই নিয়োগ-বাণিজ্যের বাইরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তিনি নিজের মেয়ে, জামাতা, ভাই, ভাতিজাসহ স্বজনদেরও নানা পদে নিয়োগ দিয়ে যেন পুরো অধিদপ্তরকেই পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ফেলেছিলেন।

র‌্যাব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মালেক তার ছোট মেয়ে নৌরিন সুলতানা বেলীকে অধিদপ্তরের অফিস সহকারী পদে চাকরি দিয়েছেন। আপন ভাই আব্দুল খালেক আর ভাতিজা আব্দুল হাকিম রয়েছেন অফিস সহায়ক পদে। বড় মেয়ে বেবীর স্বামী রতনকে দিয়েছেন ক্যান্টিন ম্যানেজারের চাকরি; ভাগ্নে সোহেল শিকারী রয়েছেন গাড়িচালক পদে। এ ছাড়া ভায়রা মাহবুবকেও দিয়েছেন গাড়িচালকের চাকরি; নিকটাত্মীয় কামাল পাশা রয়েছেন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক পদে।

যে প্রভাবে শতকোটি টাকার মালিক তিনি: সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে ভুঁইফোঁড় সংগঠন খুলে এর সভাপতি হওয়ার পরই যেন মালেক হাতে ‘আলাদিনের চেরাগ’ পেয়ে যান। ওই পদের ক্ষমতাবলে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের চালকদের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন। ওই পদের কারণে অধিদপ্তরের অসাধু সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার সখ্য গড়ে ওঠে। এর পর থেকেই গাড়িচালকসহ বিভিন্ন ছোট পদে নিয়োগ-বদলি আর পদোন্নতির ‘বড়কর্তা’ বনে যান তিনি। এসব অপকর্ম করে কোটি কোটি টাকা আয় করেন তিনি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) দপ্তরের কর্মকর্তাদের জিম্মি করে চিকিৎসকদের বদলি-পদোন্নতিসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে কর্মচারীদের নিয়োগ-বদলি করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন এই মালেক।

যে তিনটি গাড়ি মালেকের কবজায়: সূত্র জানায়, চালক হলেও মালেক বহু বছর ধরে নিয়মিত গাড়ি চালান না। তবে তার কবজায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে বরাদ্দ করা সাদা রঙের একটি পাজেরো জিপ (ঢাকা মেট্রো গ-১৩-২৯৭৯) ছিল। সেটি ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করতেন। এ ছাড়া অধিদপ্তরের একটি পিকআপ (ঢাকা মেট্রো ঠ-১৩-৭০০১) নিজের গরু খামারের জন্য খাবার সরবরাহ, দুধ বিক্রি এবং জামাতার ক্যান্টিনের মালপত্র বহনে ব্যবহার করতেন তিনি। অপর একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো চ-৫৩-৬৭৪১) তার পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যবহার করতেন। এর চালকও অধিদপ্তরের নিয়োগ করা। ওই মাইক্রোবাসের চালকের নাম কামরুল।

জাল টাকা ও অবৈধ অস্ত্রের কারবার!: গতকাল মালেককে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, সম্পদ গড়ার লোভে গাড়িচালক মালেক যেন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। নিজের সম্পত্তি আর ‘সাম্রাজ্য’ রক্ষায় অবৈধ অস্ত্রও ছিল তার দখলে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসার সঙ্গে জাল মুদ্রার ব্যবসাও ছিল তার। মালেক তুরাগ এলাকায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শক্তির মহড়া ও দাপট দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করতেন। তাকে গ্রেপ্তারের সময় বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও দেড় লাখ জাল টাকা জব্দ করা হয়েছে।

অবশ্য মালেকের মেয়ে নাজনীন সুলতানা দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বাবাকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। তাদের এত সম্পদ নেই। তাদের বাড়িও দুটি নয়, একটি। তার বাবার সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা আছে।

তিনি অবশ্য স্বীকার করেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি গাড়ি তার বাবা ব্যবহার করতেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদোন্নতির পর নতুন একটি গাড়ি ব্যবহার শুরু করেন। পুরোনো গাড়িটি তার বাবা মাঝেমধ্যে বাসায় নিয়ে আসতেন। তবে নিয়মিত ব্যবহার করতেন না।





Calendar

July 2025
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd