কামাল উদ্দিন রাসেল। সিলেট শহরতলীর ৩নং তেতলী ইউনিয়নের ধরাধরপুর গ্রামের মরহুম হাজী মহরম আলী আলী’র পুত্র। ১৯৬৭সালে ধরাধরপুরের একটি সম্ভ্রাম্যমুসলিম পরিবারের সন্তান। তিনি’র পিতা সিলেট জেলার একজন সুনামধন্য সালিশ বিচারক ও স্বাধীনতা পরবর্তী কালে সিলেট সদর থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ছিলেন।
তিনি ইউনিয়ন তথা পুরো সিলেটবাসীর কাছে একজন সুপরিচিত লোক। সামাজিক অঙ্গণের প্রিয়মুখ তৃণমুল থেকে বেড়ে উঠা কামাল উদ্দিন রাসেল একান্ত স্বাক্ষাকারে প্রতিবেদককে জানান, আমার লক্ষ্য তেতলী ইউনিয়নকে একটি মডেল ও আধুনিক ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সর্বাঙ্গনিক ইউনিয়নবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় নিজেকে বিলিয়ে দেব। বিগত বছরগুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন জটিলতা নিয়ে আমি বিভিন্ন শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা সমাবেশ করেছি। ইউনিয়নকে একটি গনতান্ত্রান্তিক ইউনিয়নে ফিরিয়ে আনতে অনেক চেষ্ঠায় সফলতার লক্ষ্যে আছি। সর্বশেষ নির্বাচন থেকে দীর্ঘ ১৮বছর ইউনিয়নবাসী নির্বাচন থেকে বঞ্চিত ছিল। আমার ব্যক্তিগত প্রচেষ্ঠায় ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নির্বাচনী জটিলতা নিরসনে কাজ করেছি। আমার স্বপ্ন তেতলী ইউনিয়নকে একটি সুন্দর ও ডিজিটাল ইউনিয়নে পরিণত করতে চাই। আমি ২০০১ ইং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তেতলী ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দক্ষিণ সুরমা ফেঞ্চুগঞ্জ সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর সমর্থনে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সিলেট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযুদ্ধা বাবরুল হোসেন বাবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন তৎকালিন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত ওয়াহিদুল ইসলাম তুফা, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, এডভোকেট এটিএম ফয়েজ। এছাড়া দক্ষিণ সুরমা থানা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
২০০৮সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আলহাজ্ব মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর সমর্থনে আমার একান্তিক প্রচেষ্টায় তেতলী ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের উদ্যোগে ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে এক বিরাট নির্বাচনী জনসভা অনুষ্টিত হয়। উক্ত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি তৎকালিন সিসিক সিলেটের জননন্দিত মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ডা: আব্দুর শুকুর,সাধারণ সম্পাদক হাজী রইছ আলীসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।
কামাল উদ্দিন রাসেল এর রাজনৈতিক ও সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের একটি সংক্ষিপ্ত পরিচয় এখানে তুলে ধরলাম:-
আমার বাবা মরহুম হাজী মহরম আলী স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সিলেট সদর থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকারদের ইন্ধনে পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের বাড়ি ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের হত্যার প্রতিবাদে আমার বাবা হাজী মহরম আলীর সভাপতিত্বে সিলেট শহরের শেখ ঘাট এলাকায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়,এই ঘটনায় জিয়াউর রহমান এর সামরিক শাসক আমলে আমার বাবা হাজী মহরম আলীর বিরুদ্ধে তৎকালীন সামরিক আদালতে মামলা হয়।
রাজনীতি জীবনে সিলেট সদর থানা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক, ১৯৯০ থেকে ২০০৩ ইং পর্যš, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ২০১৯ পর্যন্ত, সিলেট বিভাগীয় কর্মী সম্মেলন ২০০২ ইং সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ময়দান, সিলেট বিভাগীয় কর্মী সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির,মঞ্চ ও পেন্ডেল ব্যবস্থাপনা উপ পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এই কমিটির আহবায়ক ছিলেন ইফতেখার হোসেন শামীম । সামাজিক কর্মকান্ডে সিলেট রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য। দক্ষিণ সুরমা সর্বদলীয় যুব ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক, ১৯৯২ ইং সিলেট সদর থানার ১৯ ইউনিয়নের মধ্যে তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের সর্বাধিক ভোটে সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হই। ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সহ সভাপতি, হজরত শাহ সূফী আরকুম আলী(র.) মাজার পরিচালনা কমিটি সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করি।
আমার গ্রাম ধরাধরপুরে ২৭ নভেম্বর ১৯৯৩ ইং বাংলাদেশ প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ততকালীন বিরোধীদলীয় উপনেতা আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ কে নিয়ে সিলেট বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের মিটিং করি,১৫ নভেম্বর ১৯৯৪ ইং চট্টগ্রাম আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রথম নির্বাচিত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী কে সিলেটের মাটিতে সর্বপ্রথম আমাদের ধরাধরপুর সমাজ কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নাগরিক সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।
২৪ মার্চ ২০০০ ইং স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী এমপি কে ধরাধরপুর গোল্ডকাপের ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি করে নিয়ে আসি। ১৭ নভেম্বর ২০১০ ইং যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হ্যামলেটের মেয়র মতিন উজ জামান কে আমার মাধ্যমে আমার গ্রামের ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সম্বর্ধনা দেই,আমার উদ্যোগে ০৬ জানুয়ারি ২০১২ ইং যুক্তরাজ্যে কনজার্ভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ রিজিওনের চেয়ারম্যান ও ক্যানারি ওয়ার্ফ এর পাবলিক রিলেশন অফিসার সিলেট বিভাগের কৃতি সন্তান জাকির খান ভাইয়ের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স এর ডেপুটি স্পিকার মিঃ নাজেল ইভান্স এমপি, মিঃ মাথিউড অফার্ড এমপি ও লন্ডন সিটির কাউন্সিলার (মেয়র অফিস)রবার্ট মিঃ রেমস কে আমার গ্রামে নিয়ে এসে ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিরাট সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করি।
আমার উদ্যোগে ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ইং মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি মহোদয়কে হজরত শাহ সূফী আরকুম আলী(র.) মাজারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নিয়ে আসি, ১৯ মার্চ ২০১৭ ইং সাবেক শিক্ষা সচিব,সাবেক নির্বাচন কমিশনের সচিব ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান(প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা) ড.সাদিক সাহেব কে হজরত শাহ সূফী আরকুম আলী (র.) বার্ষিক ওরুসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি করে নিয়ে আসি,ঐ বছর ড.সাদিক সহযোগিতায় আমরা দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেদ মোস্তফার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সিলেটের মাননীয় জেলাপ্রশাসক এর মাধ্যমে আমরা তেলিবাজর চত্বর কে হজরত আরকুম শাহ চত্বর হিসেবে ঘোষণা করাই।
১৯ মার্চ ২০১৮ ইং হজরত শাহ সূফী আরকুম আলী(র.) বার্ষিক ওরুসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি করে নিয়ে আসি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা(মন্ত্রীর মর্যাদা) ইকবাল সোবহান সাহেব কে।
ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দক্ষিণ সুরমায় প্রথম আসেন হবিগঞ্জ – সিলেট সংরক্ষিত মহিলা আসেনর মাননীয় সংসদ আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এমপি।
আমরা আমাদের মাননীয় সংসদ আলহাজ্ব মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপি সাহেবের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনির প্রচেষ্ঠায় দক্ষিণ সুরমা তথা ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তার ব্যতিক্রম নয় আমাদের তেতলী ইউনিয়ন। ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৮ম শ্রেণীতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার সহযোগিতায় নতুন নতুন বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে কামাল উদ্দিন রাসেল ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণে বাউল কল্যাণ সমিতি, সিলেট বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান সভাপতি।
সিলেট৭১নিউজ.কম/সি/দ/শরীফ