অতিথি প্রতিবেদক : নতুন পাসপোর্টের আবেদন বন্ধ থাকায় সিলেটের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রবাসীদের মধ্যেও এ নিয়ে ক্ষোভ-হতাশা বিরাজ করছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে সারাদেশে ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি। এরপর গত ৩১ মে থেকে সকল অফিসের কার্যক্রম আবারো শুরু হয়েছে। অফিস চালুর প্রায় দুই মাস এরই মধ্যে অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে পাসপোর্টের আবেদন এখনো বন্ধ রয়েছে। প্রবাসীদের অনেকে বিয়ে করার পর স্ত্রী বা স্বামীর জন্য পাসপোর্ট করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট দূতাবাস/হাইকমিশনে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারছেন না।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, পুরনো পাসপোর্ট নবায়নসহ অন্যান্য কার্যক্রম চললেও বর্তমানে নতুন পাসপোর্টের কোন আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নির্দেশে তারা নতুন পাসপোর্ট নিচ্ছেন না। উপর থেকে নির্দেশ এলেই তখন নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করবেন। গুরুতর রোগীদের পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে জানিয়ে বলা হয়, সে ক্ষেত্রে অসুস্থতার উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে আবেদনকারীকে। অন্যথায় কোন আবেদন নেয়া হবে না। এমন পরিস্থিতিতে পাসপোর্টের আবেদন করতে না পেরে প্রবাসীরা ভোগান্তিতে আছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে।
বৃটেন প্রবাসী জাহাঙ্গীর আহমদ জানান, তিনি জানুয়ারিতে দেশে এসেছিলেন। বিয়ের পর করোনা পরিস্থিতির কারণে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে বৃটেনে ফিরে যান। এরপর মার্চের শেষের দিকে দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ফলে তার স্ত্রী পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেননি। কিন্তু, এখন সরকারি অফিস খোলার প্রায় আড়াই মাস অতিক্রান্ত হতে চললেও আজও আবেদন নিচ্ছে না পাসপোর্ট অফিস।
তিনি বলেন, পাসপোর্ট না করতে পারায় তিনি হাইকমিশনে স্ত্রীর জন্য আবেদন করতে পারছেন না। হাইকমিশনে আবেদনের পর আরো দীর্ঘ প্রক্রিয়া অতিক্রম করতে হয়। কিন্তু, শুধু পাসপোর্টের জন্য তার স্ত্রীকে বাংলাদেশে বসে থাকতে হচ্ছে।
ইতালী প্রবাসী ময়েজুর রহমান ইতালীতে করোনা প্রাদুর্ভাবের কিছুদিন আগে দেশে এসেছিলেন। দেশে এসে আটকা পড়েন। দীর্ঘদিন পরে বিমান চলাচল শুরু হলে ইতালীতে ফিরে যান। তিনি বলেন, করোনার ভয়ে কার্যক্রম বন্ধ রাখা সুবিবেচ্য নয়। পাসপোর্ট অফিস প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু করতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে সব গুলো প্রতিষ্ঠান যেখানে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ; সেখানে পাসপোর্ট অফিসের একটি অংশের কাজ এতোদিন থেকে কেন বন্ধ রাখা তা বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, আবেদনের পর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করে স্ত্রীকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া দীর্ঘ সময় লাগে। পাসপোর্ট করতে না পারায় তারা আরো পিছিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক ময়নুল হোসেন জানান, নতুন পাসপোর্টের আবেদন বন্ধ আছে। ঢাকা থেকে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হচ্ছে।
নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ কতদিন পরে শুরু হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। ঢাকা থেকে নির্দেশ এলে তবেই তারা কার্যক্রম শুরু করবেন।