সিলেট :: স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, সুন্দর সমাজ নির্মাণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সম্পৃক্ত। সবার অধিকার প্রতিষ্ঠা-নিশ্চিত করাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আমরা সুন্দর একটি সমাজ দেখতে চাই। মনে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের অস্তিত্বের অংশ। মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হয়। তাই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান জমজম বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ২২জানুয়ারী বুধবার সকালে নগরীর শহিদ সুলেমান হলে আয়োজিত ‘আলোর সন্ধানে’ শীর্ষক শিশু সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। জমজম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক মঈন উদ্দিন আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জসীম উদ্দিন, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, কলামিস্ট আফতাব চৌধূরী। মিস নাজরানা ফেরদৌস ও মিস শারমিনা খানম-এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জমজম বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক মাহবুব সোবহানী চৌধূরী। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবি’র সাবেক রেজিস্ট্রার জামিল আহমদ চৌধূরী, কেমুসাস মতিন উদদীন জাদুঘরের পরিচালক ডা. মোস্তফা শাহজামান বাহার, কেমুসাস-এর সহসভাপতি সেলিম আউয়াল, সাংবাদিক আবু তালিব মুরাদ।
জমজমের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় জমজম শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিশুরা। শিশুদের পরিবেশনায় কোরআন তেলাওয়াত করেন রুমন আহমদ, জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে নাজমা, সাকিব ও মিনার, মঞ্চে শরীর চর্চা প্রদর্শণ ও প্রত্যয় পাঠ করেন ইমা ও তার দল, শিশুতোষ নৃত্য আশা মনি ও তার দল, ছড়া পাঠ হুমায়রা, পল্লীগীতি ও বাউল গান শফিক, মিনার ও তোফায়েল, ধামাইল নৃত্য আনিসা ও তার দল, দেশাত্মবোধক গান কুলসুমা, একক নৃত্য পরিবেশন করে বিলকিস। অনুষ্ঠানে জমজমের সুবিধাভোগী শিশুদের মধ্যে পিইসি, জেএসসি-তে কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। সংবর্ধিত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বাপ্পী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খলীকুজ্জামান আরো বলেন, আমাদের সবাইকে নিজেদের অবস্থান থেকে পরার্থে কাজ করতে হবে। পরের জন্য কাজ করার মানসিকতা সবার থাকে না। পরার্থতার জন্য মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সমন্বয় জরুরি। আমরা সুন্দর সমাজ চাই, মানবমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মানবের সক্ষমতার জন্য আমরা জোর দেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণে। এই কাজটি পিকেএসএফ করছে এবং আমাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোও করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মো. জসীম উদ্দিন বলেন, সিলেটের জমজম মানব কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি ক্রমশ: উচ্চ পর্যায়ে যাচ্ছে।
সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, আমাদের প্রায় ৩৮ ভাগ শিক্ষার্থী মাধ্যমিকে ঝরে যায়। সেই ঝরে যাওয়া রোধে জমজমের উদ্যোগ-কার্যক্রম প্রশংসনীয়।
স্বাগত বক্তব্যে মাহবুব সোবহানী চৌধুরী জমজম-এর কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, অসহায় শিশুদের সমৃদ্ধি ও শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্যে জমজম দীর্ঘমেয়াদী কাজ করে যাচ্ছে। এ কার্যক্রম সফলে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
সভাপতির বক্তব্যে মঈন উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য অনগ্রসর শিশুদের কল্যাণে কাজ করা। পিকেএসএফ’র সহযোগিতা আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি।