নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা বিক্রির বিশাল বাজার তৈরি হয়েছে সিলেট নগরীতে। নগরীর ভিআইপি রোড শেখঘাট কোয়ারপাড় এলাকায় গড়ে ওঠা এই বাজার থেকে প্রতিদিন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি রিকশা বিক্রি হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এবং অবৈধ অটোরিকশায় ভরে গেছে সিলেটের অলিগলি, রাজপথ। দ্রুতগতির এবং ফিটনেসবিহীন এ যন্ত্রদানব এখন রাস্তায় পথচলতি মানুষের কাছে আতঙ্কের অপর নাম। এসএমপির ট্রাফিক পুলিশের খামখেয়ালিতে অবৈধ অটোরিকশা প্রতিটি সড়ককে করে তুলেছে ঝুঁকিপূর্ণ। একটি অটোরিকশা বিক্রি করলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়, দিনে গড়ে তিন-চারটি বিক্রি করেন একেক দোকানি। এই করে দৈনিক লাভ আসে তাঁর ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। তারা অন্য ব্যবসা কেন করবে? একটু ঝুঁকি থাকলেও এ ব্যবসাই ভালো।
সম্পতি সিসিকের অভিযানে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হয়। এখন এই কুয়ারপাড় এলাকায় প্রায় সাতটি দোকানে প্রকাশ্যে অবৈধ অটোরিকশা বিক্রি হয়। বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা যেন দেখেও দেখছেন না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে প্যাডেল রিকশায় শুধু একটি মোটর লাগিয়ে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে হালকা ধরনের ব্রেকে কোনোভাবেই ওই সব বাহন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না চালকরা। পা দিয়ে প্যাডেল না করার কারণে আনকোড়া চালকরা ইচ্ছামতো গতি বাড়িয়ে চলাচল করায় হঠাৎ ব্রেক কষতে গিয়ে বিপত্তি ঘটছে। খোঁজ খবরে জানা গেছে, এসব ব্যাটারিচালিত রিকশার বেশির ভাগেরই ব্রেক দুর্বল। দ্রুতগতিতে চলার সময় সামনে কিছু পড়লে এই যানটিকে আর থামানো যায় না। উল্টে যায়। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরও অনন্যোপায় হয়ে মানুষ এসব যানবাহনে চলাচল করে।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মেডিকেল টু মদিনা মার্কেট, মেডিকেল টু কানিশাইল নদীর পাড়, কানিশাইল নদীর পাড় টু কাজীরবাজার ব্রিজ, কাজীরবাজার ব্রিজ টু কোতোয়ালী থানার সামন, দর্শন দেউড়ি টু কলাপাড়া, মদিনা মার্কেট টু আখালিয়া নয়া বাজার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রীতিমতো স্ট্যান্ড করে এসব যানবাহন চলছে। এদিকে নগরীর দক্ষিণ সুরমা ক্বীন ব্রিজের মুখ থেকে গোটাটিকর, আলমপুর, কুচাই ও শিববাড়ি এলাকায় চলাচল করছে। আর এসব স্ট্যান্ডের গাড়িগুলোর কাছ থেকে চাঁদা তুলছেন স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশের কিছু সদস্য।
অন্যদিকে সিলেট জেলার সকল থানা এলাকায় গেলেই দেখা যায় ব্যাটারিরিকশা। তারা স্থানীয় থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এসকল ব্যাটারিরিকশা চালায়।
তবে ব্যাটারিরিকশার মালিকদের অনেকে প্রশ্ন রাখেন, কেনই বা এসব যানবাহন আমদানি করার অনুমতি দেওয়া হলো, আবার কেনই বা এখন অবৈধ বলে লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না? আমরা এখন এই গাড়িগুলো নিয়ে কী করব! অনেক বেকার যুবক এ রিকশা দিয়ে সংসার চালায়। মাত্র এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করে নিজেই চালাচ্ছে তারা এ গাড়ি। প্রশাসনকে মানবিক দিকও দেখতে হবে। আর অবৈধ হলে এগুলো প্রকাশ্যে শোরুমে বিক্রি হয় কী করে?