নিউজ ডেস্ক : চাঁদা না পেয়ে একের পর এক মামলা ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে সিলেটের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। গেল ২৪ মার্চ খাদিমনগরস্থ বৃটিশ গ্যাস কুকার কোম্পানী বাই সিলেট ওয়েল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ তোলে সিলেট এসএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, ওই আইনজীবীর দায়ের করা একের পর এক মামলা ও হুমকীর ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমনকি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা নিয়েও আশংকা দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের শতাধিক কর্মচারীর জীবন-জীবীকা হুমকীর মুখে পড়বে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পত্রে ওই আইনজীবীর সহায়ক হিসেবে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদের নাম উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত আইনজীবীর নাম মিসবাউল ইসলাম। তিনি সিলেট সদর উপজেলাধীন এয়ারপোর্ট বড়শালা এলাকার মৃত নিমার আলীর ছেলে মো. মিসবাউল ইসলাম।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মিসবাউল ইসলাম ও হেলেন চক্র কখনো জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সম্পাদক, কখনো সরকারী দল আবার কখনো পররাষ্ট্র মন্ত্রীসহ তার ব্যক্তিগত সহকারীর নাম ভাঙিয়ে সিলেট ওয়েলডিং কোম্পানীর মালিক ও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর অব্যাহত ভাবে চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলা,অভিযোগ ও হুমকী অব্যাহত রেখেছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ ওই কোম্পানীতে কর্মরত সকল কর্মকর্তূা ও কর্মচারীদের জীবন-জীবীকা হুমকীর মুখে পড়েছে।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবী মিসবাউল ইসলাম সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদের ব্যবসায়ীক পার্টনার। এই দু’জন সকলের কাছে চিহ্নিত দুষ্কৃতিকারী, মামলাবাজ, ভূমিখেকো ও সন্ত্রাস কার্যক্রমে জড়িত। তাছাড়া মিসবাউল ইসলাম ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামী এবং চাদাঁবাজ বলে সকল মহলে সমালোচিত। এই চক্র দীর্ঘদিন থেকে ভূমি দখল ও টিলা ভূমি দখলের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এই চক্রের বিরুদ্ধে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে বড়শালা এলাকায় টিলা ভূমি কর্তন করে হাউসিং এবং বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সিলেট ওয়েলডিং কোম্পানীর স্বত্বাধিকারী বিশিষ্ট শিল্পপতি জনাব কয়ছর আহমদকে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতি মাসে একটি মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে আসছে মিসবাউল ইসলাম। এই অনৈতিক প্রস্তাবে অসম্মতি প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় গত ০৬/০৩/২০১৩ ইং (জিডি নং-৬৬৩) কোম্পানীর ম্যানাজার মনিরুল হকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা জিডি দাখিল করা হয়। এর আগেও কোম্পানীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প সাজিয়ে জিডি /অভিযোগ করা হয়েছিল। যার প্রতিটি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার তদন্তে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। প্রমানপত্রসহ যার দলিলাদি অভিযোগ পত্রের সাথে কমিশনার বরাবরে দাখিল করা হয়।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, জিডি নং- ৬৬৩ প্রসঙ্গে মিসবাহ’র দম্ভোক্তি উল্লেখিত জিডি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে ম্যানেজ করে কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই নিজের পক্ষে প্রতিবেদন সংগ্রহ করে কোর্টে জমা দিবেন বলে লোক মাধ্যমে সংবাদ প্রেরণ করছেন। ইতোমধ্যে ওই আইনজীবী (মিসবাউল ইসলাম) জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ব্যবহার করেও কোম্পানীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হুমকী প্রদান করেন। মিসবাহ’র নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনীতে খুনের মামলার তালিকাভূক্ত আসামীও রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সাথে মিসবাহ’র বিভিন্ন মিথ্যা মামলার স্বাক্ষী হিসেবেও ওইসব পোষা সন্ত্রাসীদের নাম রাখা হয়। যারা টাকার বিনিময়ে মিসবাহ’র সকল অপকর্মের স্বাক্ষী হিসেবে নিজেদের উৎসর্গ করে থাকে।
অভিযোগ পত্রে একের পর এক মামলা ও হুমকীর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এসএমপি কমিশনারের মাধ্যমে দ্রুত আইননানুগ হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
অভিযোগ সম্পর্কে বৃটিশ গ্যাস কুকার কোম্পানী বাই সিলেট ওয়েল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্বত্বাধীকারী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারী কয়ছর আহমদ জানান, প্রবাসীরা কষ্টার্জিত পয়সা দেশে বিনিয়োগ করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। অথচ এক শ্রেণীর চাঁদাবাজ চত্র সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নাম ভাঙিয়ে আমাদেও ধ¦ংশ করার পায়তারা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় দেশে বিনিয়োগ কারীর সংখ্যা কমার পাশাপাশি ক্ষুন্ন হচ্ছে সরকারের ভাবমূর্তি। তিনি চাঁদাবাজ মিসবাউল গ্যাংদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসএমপি কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।