দিরাই প্রতিনিধি;: সুনামগঞ্জের দিরাই সরকারি কলেজে শিক্ষকের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক চন্ডিপুর গ্রামের আছাব উদ্দিনের ছেলে মারুফ আহমদ জয়কে প্রধান আসামী করে ১৮ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেন হামলার শিকার দিরাই সরকারি কলেজের আইসিটির খন্ডকালীন শিক্ষক মিজানুর রহমান পারভেজ। দিরাই থানার মামলা (নং ৪(৪-৪-২০২২ইং)।

এদিকে কলেজে হামলা, ভাংচুর ও শিক্ষক লাঞ্চিতের প্রতিবাদে ৩ দিনের কর্ম বিরতি দিয়েছেন শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার (০৫ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় দিরাই সরকারি কলেজের রাগীব রাবেয়া ভবনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ধীমান কীর্তুনিয়া এ ঘোষনা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারি অধ্যাপক আ ন ম শোয়েব চৌধুরী, প্রভাষক মোহাম্মদ ফখর উদ্দিন চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম তালুকদার, সন্দীপন দাস, কামরুল কবির, অঞ্জন দাস, রুনু রঞ্জন ভৌমিক প্রমুখ।

জানা যায়, গত শনিবার কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহের পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে কলেজ ছাত্র সংগঠনগুলোর একাধিক গ্রুপ থাকায় পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে ছাত্র সংগঠনের নেতাদের বক্তৃতার সুযোগ দেয়া হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষক মিজানুর রহমান পারভেজের সাথে ছাত্রলীগ একাংশের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময়ে শিক্ষক পারভেজের একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অধ্যক্ষ ও সিনিয়র শিক্ষকদের আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ইউএনও মাহমুদুর রহমান মামুন অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পরপরই অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করা নিয়ে ফের হট্টগোল শুরু হয়। এসময় স্থানীয় এমপি বিরোধী বলয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সন্ত্রাসী কায়দায় মঞ্চে উঠতে চাইলে শিক্ষক মিজানুর রহমান পারভেজ বাধা দেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক মারুফ আহমদ জয় ও একই বলয়ের মেহেদী হাসান চৌধুরীসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষক মিজানুর রহমান পারভেজের উপর হামলা চালিয়ে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে। তারা কয়েকটি পুরস্কার, চেয়ার ও সাজসজ্জা ভাংচুর করে ত্রাস সৃষ্টি করে। কলেজ প্রাঙ্গনে সাধারন শিক্ষার্থীরা আতংকে হৈ হল্লোড় শুরু করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জনের ঘোষনা দেয় কলেজের শিক্ষকরা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দিরাই সার্কেল আবু সুফিয়ান বলেন, দিরাই কলেজে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় একটা অভিযোগ পেয়ে তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

দিরাই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ধীমান কীর্তুনিয়া বলেন, শিক্ষকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার তিনদিনের কর্মবিরতি পালন করছি আমরা। পাঠদান বন্ধ থাকলেও জরুরি সেবা চালু থাকবে বলে জানান তিনি।

সিলেট৭১নিউজ /আইআর/এসসি