নিজস্ব প্রতিবেদক ::
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ৩নং দুবাগ ইউনিয়নের পাঞ্জিপুরি গ্রামে জামিল আহমেদ(৩২) নামের এক যুবক খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৫ অক্টোবর গভীর রাতে স্থানীয় পাঞ্জিপুরি গ্রামের সিরাজউদ্দীনের পরিত্যক্ত বাড়িতে খুনের ঘটনাটি ঘটে। মারাত্মক আহত অবস্থায় জামিলকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। নিহতের শরীরে একাধিক দায়ের কোপ ও দেশিয় অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে জামিলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে ঐ বাড়িকে ব্যবহার করে ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান করে আসছিল একটি চক্র। অবৈধ লেনদেনের ভাগবাটোয়ারা কে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ডটি ঘটেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। পুলিশ ২৬ অক্টোবর ভোরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায়।
এদিকে ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। তিনি জানান, ঐ বাড়িটি ছিল সিরাজউদ্দীনের। বর্তমানে তিনি খরিদসুত্রে ঐ বাড়ির মালিক৷ যদিও সিরাজুদ্দীন বাড়িটি বিক্রি করলেও দীর্ঘদিন থেকে আমাদের নামে রেজিষটারি করে দিচছেন না। সিরাজুদ্দীনের ছেলে রাহমান মোঃ জিল্লুর ও সিরাজুদ্দীনের ছোটভাই মাহতাবুর রহমান দীর্ঘদিন থেকে বাড়িটিকে ব্যবহার করে অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা করে আসছে। রাহমান মোঃ জিল্লুরের নামে ইতিমধ্যে বিয়ানীবাজার থানায় অস্ত্র ও মাদকের মামলা রয়েছে। এছাড়াও ২০১৩ সালে র্যাব তাকে মাদকসহ গ্রেফতার করলে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে পুনরায় মাদক ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যাবসা অব্যাহত রাখে এবং তার পরিবার নিয়ে বিয়ানীবাজার পৌর শহরে চলে যায় যাতে গ্রামের ফাঁকা বাড়িতে নির্বিঘ্নে অবৈধ এই ব্যবসাটি চালিয়ে যেতে পারে। বিষয়টি আমি বিয়ানীবাজার থানাকে অবহিত করে রেখেছি। তাদের কারনে এলাকার তরুণ ও যুবকরা মাদকাশক্ত ও অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়তেছে।
২৫ অক্টোবর গভীর রাতে আমার ছোটভাই শরিফ তার কয়েকজন সহপাঠী জামিল, সেলিম ও আজমলকে সাথে নিয়ে রাহমান জিল্লুরের অবৈধ আস্তানা গুড়িয়ে দিতে গেলে রাহমান মোঃ জিল্লুর ও তার সাথে থাকা চোরাকারবারিরা আমার ভাইসহ তার সহপাঠীদের উপর দেশিয় অস্ত্রসহ আক্রমণ করে সবাইকে আহত করে। এসময় আমার বড়ভাই র্যাব কর্মকর্তা খালিকুর রহমানের শ্যালক জামিল গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে সে মারা যায়। বাকিরা সব আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। ‘
এদিকে নিহত জামিলের বড়ভাই হোসেন আহমদ বাদী হয়ে রাহমান মোঃ জিল্লুরকে প্রধান ও মাহতাবুর রহমানকে দ্বিতীয় আসামী করে মোট ৬ জনের নামে বিয়ানীবাজার থানায় আজ(২৭ অক্টোবর) একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, রাশেদ আহমদ,(উজিরপুর) তাজউদ্দিন,(শেওলা) জাকাই মিয়া ও বদরুল ইসলাম (বৈরাগী বাজার)।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবনী শংকরের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার সত্যা স্বীকার করে বলেন, অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
মামলার বাদি হোসেন আহমদ তার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে প্রশাসনসহ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রতিবেদকের তরফ থেকে মামলার আসামী রাহমান মোঃ জিল্লুর, তার পিতা সিরাজউদ্দিন, এমনকি মাহতাবুর রহমানকে মুঠোফোনে বারবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।পরে মাহতাবুর রহমানের স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান তার স্বামী মাহতাবুর রহমান ও ভাসুরের ছেলে রহমান মোঃ জিল্লুরকে সম্পুর্ন মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলুক ভাবে জামিল হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।