নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে চাউলধনী হাওর পারের ২৫ টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের আহাজারি কেউ শুনছেনা। ইরি-বোরো ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় তারা আন্দোলন করছেন। উপজেলা সদরে লাঙ্গল, জোয়াল, মই, কাটিয়াসহ কৃষি উপকরণ নিয়ে ২০ জানুয়ারী বুধবার সকালে বিশ্বনাথ বাসিয়া ব্রিজে উপর মানববন্ধনে কর্মসুচী পালন করেন হাজারখানেক কৃষক ও এলাকাবাসী।
চাউলধনী হাওর ও কৃষক রক্ষা কমিটির আহবায়ক আবুল কালাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দশঘর ও দৌলতপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার ইরি-রোবো জমি, খাল-বিল, পুকুর ও জলাশয় রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি খাস খতিয়ান ভুক্ত ১৭৮একর ভূমি লীজ দেয়া হলে দশঘর মৎসজীবি সমবায় সমিতি নামে অমৎসজীবি এই সমিতি কৃষকদের মালিকানাধীন জমি দখলে অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। লীজের সকল শর্ত ভঙ্গ করে লীজ গ্রহীতা সাব লীজ দিয়ে সেচের মাধ্যমে হাওরের পানি প্রত্যাহার করে ইরি-বোরো জমির চারা এবং ফসলি জমির পানি প্রত্যাহার করায় কয়েক হাজার জমি ফেটে চৌচির হওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় শত কোটি টাকার ফসল উৎপাদন না হওয়ার আশংকা রয়েছে। এতে এই অঞ্চলের কৃষকদের খাদ্যাভাব দেখা দেবে।
বক্তারা মৎস অধিদপ্তর, কৃষি অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের চাউলধনী হাওর বাচাঁতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান। তা না হলে, এলাকাবাসী কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবী বাস্তবায়নে আদায় করে নেবে।
মাষ্টার বাবুল মিয়ার পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমির আলী, বিশিষ্ট লেখক কলামিষ্ট ও সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এ এইচ এম ফিরোজ আলী, দৌলতপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আরিফ উল্লাহ সিতাব, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন ধন মিয়া, ইরন মিয়া, আব্দুল মজিদ, ওয়াব আলী, শাহিন তালুকদার এবং রাসেল আহমদ। কৃষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আহমদ আলী, সামসুদ্দিন, মাওলানা ছমির উদ্দিন, নজির আহমদ, আরব খান, নজরুল ইসলাম, আজাদ আবু তাহের, রুহেল আহমদ কালু, জাইদুল ইসলাম, লুৎফুর রহমান, আকবর আলী সজ্জাদ আহমদ প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্বারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দাখিল করা হয়। স্বারকলিপিতে চাউলধনী হাওরের সরকারি জলাশয়ের সাথে কৃষকদের ভূমির সীমানা নির্ধারণ, কৃষকদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মাললা প্রত্যাহার, চাউলধনী হাওর রক্ষায় সুইচ গেইট ও বেড়ি ভাঁধ নির্মাণ, দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় হাওর উন্নয়ন ও লীজ গ্রহীতার নিকট থেকে কৃষকদের ক্ষতিপুরণ আদায়ের দাবি জানানো হয়।