বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঠাকুরগাঁও সদরে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আশা করব, এখানে একটি সুষ্ঠু অবাধ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা যেন ভোট দিতে পারেন এটাই আমাদের একমাত্র চাওয়া। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি সরকারের ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। তাই তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় ঠাকুরগাঁওয়ের কালীবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে সংসদ, উপজেলা এবং অন্যান্য নির্বাচনসহ চলমান পৌরনির্বাচনেও নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য, নির্বাচন করার তাদের কোন যোগ্যতাই নাই। দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক স্টেটমেন্ট দিয়েছেন পত্র-পত্রিকায় যে, এই নির্বাচন কমিশন অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তারা দুর্নীতি করছে। অসদাচারণ করছে ।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, সরকার, সরকারি দল, আওয়ামী লীগ যেভাবে ২০১৮ সালে ভোট ডাকাতি করেছিল, যড়ষন্ত্র করে আগের রাতেই ভোট করেছিল রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, এবারো একইভাবে তারা এখন পৌরসভাগুলোতে ভোট নিচ্ছে। আগামীকাল শনিবার সিরাজগঞ্জ সদরে নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে ইতোমধ্যেই প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ১৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে, মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়েছে। একই ঘটনা উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জে ঘটেছে।
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বাধীনতা পায়নি অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে হবে ভোটের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদেরের দিকে ইশারা করেন বলেন, আয়নার দিকে তাকান, বুকে হাত দিয়ে বলেন, আপনারা কি করছেন। এই জাতির আশা আকাঙ্ক্ষাকে ধুলিস্মাত করে দিচ্ছেন, চুরমার করে দিচ্ছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের তারা নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখেন না।
ফখরুল ইসলাম করোনার টিকা নিয়ে বলেন, মেগা লুটপাট হচ্ছে। যে ভ্যাক্সিন কেনা হচ্ছে ২ টাকা ৪০ পয়সায়, সেটি ৪ টাকায় বিক্রি করা হবে। মাঝখানে মধ্যস্বত্ত্ব ভোগী এই সরকারের শিল্প প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো এই টিকা ব্যবস্থাপনা করছে। তারা বেসরকারিভাবেও টিকা বাজারজাত করার ঘোষণা দিয়েছে। তারা আরো ত্রিশ লক্ষ ভ্যাক্সিন নিয়ে পাবলিক সেক্টরে দিতে চায়।
মহাসচিব এর সমালোচনা করে বলেন, বেক্সিমকোর বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ভালো নয়। কারণ এতে সাধারণ মানুষ টিকা বঞ্চিত হবে। এখনো সময় আছে, সরকারের উচিত হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরেপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করা।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখনও জেলে আছেন। যদিও তিনি বাসায় আছেন। কিন্তু সেই বাসা থেকে তিনি বের হতে পারেন না। তার শরীর খুবই খারাপ, তার চিকিৎসা ঠিকমতো হয় না। তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সেই অনুমতি সরকার দেয় না। সামান্য ২ কোটি টাকার মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে আজ জেলে রাখা হচ্ছে। অথচ তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আবারও প্রমাণ করলো যে আওয়ামী লীগের অধীনে ও দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে কখনই সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়।