সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মুফতির গাঁয়ের ইংল্যান্ড প্রবাসী মজম্মিল আলীর বাড়ির এক সময়ের কাজের লোক আলকাছ আলীর হয়রানী ও নিপীড়নের শিকার স্ত্রী ফাতেমা।
জানা গেছে, মেয়েদের বিয়ে দিয়ে ইাংল্যান্ড নিতে রাজি না হওয়ায় আলকাছ বাহিনীর হয়রানী ও নিপীড়নের শিকার সিলেটের বিশ্বনাথে যুক্রাজ্য প্রবাসীর স্ত্রী। বর্তমানে প্রবাসীর ওই স্ত্রী ঘরছাড়া হয়ে ভবঘুরে দিনযাপন করছেন।
অভিযোগে প্রকাশ- বিশ্বনাথ থানার মুফতির গাঁয়ের মজম্মিল আলী স্থায়ীভাবে ইংল্যান্ডে বসবাস করেন। তার দুই মেয়েও ইংল্যান্ড সিটিজেন এবং তারাও ইংল্যান্ডে বাস করে। দেশের বাড়িঘর ও সহায় সম্পদ একাকী দেখাশোনা করেন তার স্ত্রী ফাতেমা খানম। পাশাপাশি ঘরবাড়ির কাজ-কাম করতো একই গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র আলকাছ আলী। দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে আলকাছ আলী ফাতেমা খানমের কাছে সত্যতা ও সরলতার দৃঢবিশ্বাস জন্মায়। ফাতেমা খানম সরল বিশ্বাসে তাকে দিয়ে তার অফিস আদালত ও ব্যাংকের সকল কাজকর্ম করাতেন।
এক পর্যায়ে আলকাছ আলী ও তার স্বজনদের লুলুপ দৃষ্টি পড়ে ফাতেমা ও মজমিল আলীর ইংল্যান্ড সিটিজেন দুই মেয়ে প্রতি। তারা তাদের দুই ছেলের সাথে ওই দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ইংল্যান্ড নেয়ার জোর দাবি জানায়। মজমিল আলী এবং ফাতেমা খানম ও তাদের মেয়েরা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আলকাছ ও তার স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমার বিরুদ্ধে হামলা-মামলার পথ বেছে নেয়।
মামলা-হামলা দিয়ে কাবু করে মেয়েদের নেয়ার চেষ্টায় থাকে তারা। আলকাছ ও তার স্বজনরা নানা কুটকৌশলে প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার, এমনকি ঘরছাড়া করে। আলকাছ আলী ওই বাড়িতে থাকাবস্থায় সরলতার সুযোগে ফাতেমা খানমের স্বাক্ষর করা কয়েকটি ব্যাংক চেক হাতিয়ে নেয়। পরে এগুলো ব্যবহার করে আলকাছ তার স্বজনরা একের পর এ¦ক মামলা দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমাকে গ্রেফতার করায় এবং হয়রানী করতে থাকে।
ঘটনার বিবরণে আরো প্রকাশ-আলকাছ আলী প্রবাসী মজমিল আলীর ঘর থেকে চুরি করে নেয়া একটি চেক দিয়ে সে নিজে বাদী হয়ে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট ৪র্থ আদালতে ফাতেমা খানমের বিরুদ্ধে ৬ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা (নং-৪২২/১৯) করে। বর্তমানে মামলাটি দায়রা ৪১৪/২০২০ নং মামলা হয়ে বিচারাধীন আছে। চুরি করে নেয়া অপর একটি চেক দিয়ে আলকাছ আলী তার বোন নাজমা বেগমকে দিয়ে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালতে ৮লাখ টাকার আরেকটি চেক ডিজানার মামলা (নং-২১৪০/১৯) করায়।
আলকাছ আলী তার বোন নাজমা বেগমের বান্ধবী মনোয়ারা বেগমকে দিয়ে ফাতেমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে জাল স্বাক্ষরে এডভোকেট মো. আব্দুল মালিককে দিয়ে ০৭.১০.২০১৯ তারিখে ০১ নং একটি জাল এফিডেভিট করায়। ওই এফিডেভিট দিয়ে মনোয়ারা বেগমকে দিয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ থানায় যুক্তরাজ্য প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা খানমের বিরুদ্ধে ১৩(১১)১৯ নং প্রতারণার মামলা করায়। পরে ওই মামলা দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা খানমকে গ্রেফতার করায়। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। চোরাই চেক ব্যবহার করে প্রতারক আলকাছ আলী তার বোনোর বান্ধবী মনোয়ারকে দিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বিশ্বনাথ আদালতে ১৩ লাখ টাকার আরেকটি চেক ডিজঅনার মামলা (নং ৩৮৯/১৯) করায়। আলকাছ তার দুলাভাই ব্যাংক কর্মচারী আব্দুল কাদেরকে দিয়ে ইসলামী ব্যাংক বিশ্বনাথ শাখা থেকে ফাতেমা খানমের নামে ১লাখ টাকার ঋণ উঠিয়ে নেয়। পরে টাকা পরিশোধ না করে ফাতেমা খানমের স্বাক্ষরিত চেক দিয়ে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩নং আমলী আদালতে ফাতেমার বিরুদ্ধে আরেকটি চেক ডিজঅনার মামলা (৪৭/২০২০) করায়। আলকাছ আলীর করানো এসব মামলা পরিচালনা করে তারই ছোটভাই থানা ও কোর্টের দালাল ফুলকাছ আলী।
মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করে আলকাছ আলী ও তার স্বজনরা প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা খানমের ঘর ও সহায় সম্পদ লুট করে নেয়। প্রতারক আলকাছ আলীর মামলা-হামলায় ঘরছাড়া হয়ে ভবঘুরে বাস করছেন ইংল্যান্ড প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা খানম।
ফাতেমা খানম তার উপর আলকাছ চক্রের এ নির্যাতন-নিপীড়ন ও হয়রানীর প্রতিকার এবং তাদের জান মালের নিরাপত্তা চেয়েছেন। গত ২৯ নভেম্বর সিলেটের পুলিশ সুপার,১ডিসেম্বর সিলেট রেঞ্জে পুলিশের ডিআই জি, ১ ডিসেম্বর সিলেটের বিভাগীয় কমিলনার, ১ডিসেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে তিনি এ বিষয়ে পৃথক আবেদন করেন। আবেদনের অনুলিপি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, পররাস্ট্রমন্ত্রী,প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী-সহ সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন দায়িত্বশীল মহলে প্রেরন করেন।