তফসিল ঘোষণার পর পৌরসভা নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন।
গতকাল রোববার দিরাই, বড়লেখা, শায়েস্তাগঞ্জসহ দেশের ২৫ পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর সোমবার প্রথমবারের মতো ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ইসরাইল হোসেন সিলেট বিভাগের ৩ পৌরসভার তফসিল ঘোষণার বিষয়টি জানান, পর্যায়ক্রমে নির্বাচন কমিশন অন্যান্য পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। গতকাল রোববার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মোঃ আলমগীর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আগামী ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। ৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার। ২৮ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রথম দফায় সিলেট বিভাগের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই পৌরসভা, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা পৌরসভার ও হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২য় বারের মতো আসন্ন পৌর নির্বাচনেও মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবেন। কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিগত নির্বাচনের মতোই স্বতন্ত্রভাবে লড়তে হবে।
সূত্র জানায়, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার/ জেলা নির্বাচন অফিসার/ অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার, রিটার্নিং অফিসার এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসার, সহকারী রিটানিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসককে আপীল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরগণ ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি শপথ নেন। প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। ‘খ’ শ্রেণির এই পৌরসভার মেয়াদ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। গত নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মোশারফ মিয়া বিএনপির প্রার্থী মঈন উদ্দিন চৌধুরী মাসুককে হারিয়ে বিজয়ী হন। ‘খ’ শ্রেণির বড়লেখা পৌরসভার গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু ইমাম মোঃ কামরান চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী খিজির আহমদকে হারিয়ে বিজয়ী হন। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর ৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত পরিষদের প্রথম সভা হয়। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি বড়লেখা পৌরসভার মেয়াদ সম্পন্ন হবে।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর ‘ক’ শ্রেণির এই পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পরে পরিষদের প্রথম সভা হয়েছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। বিগত নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী এফ.এম অলিকে হারিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছালেক মিয়া বিজয়ী হয়েছিলেন।
এদিকে, তফসিল ঘোষণার পর মেয়র ও কাউন্সিলর পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। নিজ নিজ কর্মী -সমর্থকদের চাঙ্গা করার পাশাপাশি দলীয় মুরুব্বীদের সমর্থন পেতে দ্বারে দ্বারে ছুটে যাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে মেয়র পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে দলের সিনিয়র নেতাদের আশীর্বাদ পেতে লবিং শুরু করেছেন।
সূত্র জানায়, দেশের নির্বাচন যোগ্য ৩২৯ পৌরসভার মধ্যে গতকাল রোববার ২৫ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। সিলেট বিভাগের ৩ পৌরসভা ছাড়া অন্য ১২ পৌরসভার নির্বাচন পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে।
যোগাযোগ করা হলে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, আমাদের মহাসচিবের সাথে আলোচনার পর নির্বাচনে অংশ গ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হলে যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেন, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে জনবান্ধব ও যোগ্য প্রার্থীকেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেবে। বিতর্কিত ও চিহ্নিত কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে না।