সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:ঢাকার কাকরাইলে যে নয়তলা ভবন দখলে নিয়ে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কার্যালয় বানিয়েছিলেন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সেই ভবনটি মালিকরা বুঝে পেয়েছেন।
ওই ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর ভাড়া দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়েছেন তারা।
কয়েক বছর ধরে ঢাকায় যুবলীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা সম্রাট সংগঠনটির ঢাকা দক্ষিণের বিগত কমিটির সভাপতি ছিলেন। ক্যাসিনোকাণ্ডে গত বছর গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত কাকরাইল মোড়ের এই ভবনে আস্তানা গেড়েছিলেন তিনি। ভবনটিও পরিচিত হয়ে উঠেছিল ‘সম্রাট ভবন’ নামে।
গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বরে ফকিরাপুল, গুলিস্তান এলাকায় কয়েকটি ক্লাবে র্যাবের অভিযানে ক্যাসিনো চালানোর বিষয়টি ধরা পড়ার পর সম্রাটের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সম্রাটকেও গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়ালে কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে কাকরাইলের এই কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন সে সময় ঢাকায় যুবলীগের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত সম্রাট। রাতভর তার নামে স্লোগান দিতে থাকেন ওই নেতাকর্মীরা। এভাবে তিনি সেখানে কয়েক দিন অবস্থান করেন; পরে আত্মগোপন যান।
এর সপ্তাহখানেক বাদে কুমিল্লা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে ওই ভবনে অভিযান চালায় র্যাব। পুরো ভবনে সম্রাটের অফিস ছাড়া আর কিছু ছিল না।
সে সময় ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, চতুর্থ তলায় তৎকালীন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সম্রাটের অফিস, পাশেই খাবারের ক্যান্টিন। ভবনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ছোট ছোট অফিস আর সম্রাটসহ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছবি।
ষষ্ঠ তলার একটি কক্ষে একটি বিশেষ ধরনের চেয়ার ছিল। ভবনের ছাদের দক্ষিণ দিকে তৈরি করা হয়েছিল একটি মনোরম বাগান; সেখানে কলাগাছসহ বিভিন্ন ছোট ছোট গাছ ছিল। দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটি কৃত্রিম পাহাড়ি ঝর্ণাও তৈরি করা হয়েছিল।
উত্তর পাশে একটি কক্ষে বেড ও এটাচড বাথরুম দেখতে পাওয়া যায়। বাগানের পূর্বপাশে ছিল একটি বড় হল রুম। ছাদের এই পুরো আয়োজনকে ‘সম্রাটের বাংলো’ বলেছিলেন অভিযান পরিচালনাকারী র্যাব সদস্যরা।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, দিনের একটি বড় সময় এই অফিসে কাটাতেন সম্রাট। তার অনুসারী যুবলীগ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও ছিল অন্যদের চোখে পড়ার মতো।
ভবনে তল্লাশি চালিয়ে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া পায় র্যাব।
সেখানে দুটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও দুটি লাঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তারা বলেছিলেন, সেগুলো নির্যাতন করার কাজে ব্যবহার করা হত।
ওই অভিযানের মধ্য দিয়ে সম্রাটের দখলদারিত্ব শেষ হওয়া ভবনটি বুঝে পেয়ে সেখানে ‘হাজী লতিফ ট্রেড সেন্টার’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়েছেন মালিকরা।