April 19, 2024, 1:09 pm

সংবাদ শিরোনাম :
জমির ধান নষ্ট করে দিলো প্রতিপক্ষ: দিশেহারা কৃষক সিলেটে ইট ভাটা নিয়ে নজিরবিহীন কেঙ্ককারী বিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না : প্রধানমন্ত্রী সুজানগর ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদের কমিটি গঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত মাওলানা লুৎফুর রহমানের মৃত্যু ”গুজব সংবাদ ফেসবুকে” বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বিজিবির নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে সচিবদের :প্রধানমন্ত্রীর বইমেলা বাঙালি জাতিসত্তা দাঁড় করাতে সহায়ক : কবি নুরুল হুদা দুর্নীতি-অনিয়ম র অভিযোগে ডৌবাড়ী প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টের ৪ সদস্য বহিষ্কারের অভিযোগ ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী গোয়াইনঘাটের শীর্ষ কুখ্যাত চোরাকারবারী কালা মিয়া বিছানাকান্দি সীমান্তে অবৈধ পথে ঢুকছে ভারতীয় গরু :নেপথ্যে গোলাম হোসেন! বাদাঘাট মসজিদে ৫ লাখ টাকার অনুদান দিলেন সেলিম আহমদ এমপি রতনের আশীর্বাদ : যাদুকাটা গিলে খাচ্ছে রতন-মঞ্জু গোয়াইনঘাটে স্কুলের নামে প্রবাসীর জমি দখল গোয়াইনঘাটে এক শিবির নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ  সিলেটে শেখ হাসিনার প্রথম সফর স্মরণ করে আবহবিচ’র দু’আ মাহফিল শেখ হাসিনার সিলেট শুভাগমণের ৪৩ বছর সোমবার সিলেটে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক এমপির আত্মার মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা নির্বাচিত সুনামগঞ্জের গোলাম আজম তালুকদার দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মোখা:‘পরিস্থিতি বুঝে’ এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নির্বাচনের ৪ দিন আগে নতুন যে প্রতিশ্রুতি দিলেন এরদোগান উত্তাল পাকিস্তান, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলা জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বৈধ বলার সুযোগ নেই আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘটত না: ট্রাম্প কী হচ্ছে, আর কী হবে তা সময়ই বলে দেবে: অপু বিশ্বাস সুদান থেকে ফিরলেন আরও ৫১ বাংলাদেশি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির গাড়ি চালকের শতকোটি টাকা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির গাড়ি চালকের শতকোটি টাকা

Please Share This Post in Your Social Media

অনলাইন ডেস্ক : তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আব্দুল মালেক ওরফে বাদল (৬৩)। পেশায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক। সর্বশেষ চালাতেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে বরাদ্দ করা সরকারি গাড়ি। অধিদপ্তরের অপর দুটি গাড়ির একটি দিয়ে নিজের গরুর খামারের দুধ বিক্রি করেন, অন্যটিতে চড়তেন তার পরিবারের সদস্যরা।

ঢাকায় রয়েছে তার কাঠায় কাঠায় জমি, একাধিক বহুতল বাড়ি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। ডেইরি ফার্মসহ বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি আছে কোটি কোটি টাকা। ব্যাংকেও আছে নামে-বেনামে টাকা। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যের এই গাড়িচালকের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকার বেশি। অবৈধ সম্পদ গড়তে গিয়ে অনিয়ম-অপকর্মে তিনি যেন ছাড়িয়ে গেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত-সমালোচিত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনকেও। স্বাস্থ্যের এই ‘নয়া আবজাল’ টাকা পাচার করেছেন বিদেশেও।

গতকাল রোববার র‌্যাব-১-এর একটি দল চালক মালেককে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। অবশ্য এর আগেই তার অপকর্ম আর সম্পদের অনুসন্ধান চালাতে শুরু করেছিলেন গোয়েন্দারা। সেখানে মালেকের যে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে বিস্মিত সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা। একজন গাড়িচালকের বেতনই বা কত? কিন্তু তিনি সেই সামান্য চাকরি করেই সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। গাড়িচালক পরিচয়েই টাকার কুমির বনে গেছেন মালেক।

জানতে চাইলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে মালেকের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকার বেশি। নামে-বেনামে আরও কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বলেন, চার বছর ধরে মালেক আমার চালক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। তবে কখনও তার অনিয়ম বা কোনো দুর্নীতির ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। আমার কানেও আসেনি। এর আগে সে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেকজন ডিজির গাড়ি চালিয়েছিল।

তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর দেশজুড়ে ক্যাসিনোসহ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে শুদ্ধি অপারেশন শুরু করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কয়েক মাস ধরে ওই অভিযান স্থবির ছিল। স্বাস্থ্যের মালেকের গ্রেপ্তারের বিষয়টি দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ। শিগগির এ ধরনের আরও কয়েকজন গ্রেপ্তার হতে পারেন।

কীভাবে এত কিছুর মালিক হলেন এই ক্ষুদ্র কর্মচারী- সে অনুসন্ধানেও বিস্মিত হতে হবে সবাইকে। তিনি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও প্রভাবশালী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে। ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন খুলে তিনি এর সভাপতি হয়েছেন। সেই পদের দাপট দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলেছিলেন পুরো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে। নিয়োগ-বদলি থেকে শুরু করে পদোন্নতিও হতো তার অফিস থেকেই!

জানা যায়, অষ্টম শ্রেণি পাস মালেক ১৯৮২ সালে সাভারে একটি স্বাস্থ্য প্রকল্পে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন। দুই বছর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে তার চাকরি স্থায়ী হয়। এরপর তিনি প্রেষণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরে গাড়িচালক হিসেবে বদলি হন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত কাগজে-কলমে সেখানেই তিনি গাড়িচালক ছিলেন। এর আগে মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের গাড়ির চালকও ছিলেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আগামী ২২ অক্টোবর মালেককে তলব করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে দুদকের হাজিরা দেওয়ার আগেই র‌্যাবের হাতে ধরা পড়লেন তিনি।

যত সম্পদ: ধর্মের লেবাস নিয়ে চলাফেরা করতেন আব্দুল মালেক। বিয়ে করেছেন দুটি। প্রথম স্ত্রী নার্গিস আক্তারের নামে তুরাগের দক্ষিণ কামারপাড়ায় রমজান মার্কেটের উত্তর পাশে ছয় কাঠা জায়গার ওপর সাততলা দুটি আবাসিক ভবন তৈরি করেছেন, যার নাম ‘হাজী কমপ্লেক্স’। এ দুটি ভবনে ২৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর একটি ভবনের তৃতীয় তলার এক আলিশান ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। বাকি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দিয়েছেন।

র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে, এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মালেকের আরও ১০ থেকে ১২ কাঠা জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে ধানমন্ডি মৌজার হাতিরপুল এলাকায় সাড়ে চার কাঠা জমিতে ১০ তলা ভবন নির্মাণাধীন। তার বড় মেয়ে বেবীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়া এলাকায় ১৫ কাঠা জায়গার ওপর ‘ইমন ডেইরি ফার্ম’ নামে একটি গরুর খামার রয়েছে। সেখানে অন্তত ৫০টি বাছুরসহ গাভি রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেন তার ‘পারিবারিক প্রতিষ্ঠান’। তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, গাড়িচালক মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পদে লোকজনকে চাকরি দিয়েছেন। তাকে অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তারা সহায়তা করেছেন। তার ওই নিয়োগ-বাণিজ্যের বাইরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তিনি নিজের মেয়ে, জামাতা, ভাই, ভাতিজাসহ স্বজনদেরও নানা পদে নিয়োগ দিয়ে যেন পুরো অধিদপ্তরকেই পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ফেলেছিলেন।

র‌্যাব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মালেক তার ছোট মেয়ে নৌরিন সুলতানা বেলীকে অধিদপ্তরের অফিস সহকারী পদে চাকরি দিয়েছেন। আপন ভাই আব্দুল খালেক আর ভাতিজা আব্দুল হাকিম রয়েছেন অফিস সহায়ক পদে। বড় মেয়ে বেবীর স্বামী রতনকে দিয়েছেন ক্যান্টিন ম্যানেজারের চাকরি; ভাগ্নে সোহেল শিকারী রয়েছেন গাড়িচালক পদে। এ ছাড়া ভায়রা মাহবুবকেও দিয়েছেন গাড়িচালকের চাকরি; নিকটাত্মীয় কামাল পাশা রয়েছেন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক পদে।

যে প্রভাবে শতকোটি টাকার মালিক তিনি: সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে ভুঁইফোঁড় সংগঠন খুলে এর সভাপতি হওয়ার পরই যেন মালেক হাতে ‘আলাদিনের চেরাগ’ পেয়ে যান। ওই পদের ক্ষমতাবলে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের চালকদের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন। ওই পদের কারণে অধিদপ্তরের অসাধু সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার সখ্য গড়ে ওঠে। এর পর থেকেই গাড়িচালকসহ বিভিন্ন ছোট পদে নিয়োগ-বদলি আর পদোন্নতির ‘বড়কর্তা’ বনে যান তিনি। এসব অপকর্ম করে কোটি কোটি টাকা আয় করেন তিনি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) দপ্তরের কর্মকর্তাদের জিম্মি করে চিকিৎসকদের বদলি-পদোন্নতিসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে কর্মচারীদের নিয়োগ-বদলি করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন এই মালেক।

যে তিনটি গাড়ি মালেকের কবজায়: সূত্র জানায়, চালক হলেও মালেক বহু বছর ধরে নিয়মিত গাড়ি চালান না। তবে তার কবজায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে বরাদ্দ করা সাদা রঙের একটি পাজেরো জিপ (ঢাকা মেট্রো গ-১৩-২৯৭৯) ছিল। সেটি ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করতেন। এ ছাড়া অধিদপ্তরের একটি পিকআপ (ঢাকা মেট্রো ঠ-১৩-৭০০১) নিজের গরু খামারের জন্য খাবার সরবরাহ, দুধ বিক্রি এবং জামাতার ক্যান্টিনের মালপত্র বহনে ব্যবহার করতেন তিনি। অপর একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো চ-৫৩-৬৭৪১) তার পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যবহার করতেন। এর চালকও অধিদপ্তরের নিয়োগ করা। ওই মাইক্রোবাসের চালকের নাম কামরুল।

জাল টাকা ও অবৈধ অস্ত্রের কারবার!: গতকাল মালেককে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, সম্পদ গড়ার লোভে গাড়িচালক মালেক যেন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। নিজের সম্পত্তি আর ‘সাম্রাজ্য’ রক্ষায় অবৈধ অস্ত্রও ছিল তার দখলে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসার সঙ্গে জাল মুদ্রার ব্যবসাও ছিল তার। মালেক তুরাগ এলাকায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শক্তির মহড়া ও দাপট দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করতেন। তাকে গ্রেপ্তারের সময় বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও দেড় লাখ জাল টাকা জব্দ করা হয়েছে।

অবশ্য মালেকের মেয়ে নাজনীন সুলতানা দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বাবাকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। তাদের এত সম্পদ নেই। তাদের বাড়িও দুটি নয়, একটি। তার বাবার সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা আছে।

তিনি অবশ্য স্বীকার করেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি গাড়ি তার বাবা ব্যবহার করতেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদোন্নতির পর নতুন একটি গাড়ি ব্যবহার শুরু করেন। পুরোনো গাড়িটি তার বাবা মাঝেমধ্যে বাসায় নিয়ে আসতেন। তবে নিয়মিত ব্যবহার করতেন না।





Calendar

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd