November 4, 2025, 9:55 pm

সংবাদ শিরোনাম :
নিসচা ও প্রশাসনের উদ্যোগে বড়লেখায় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন ইম্পেরিয়াল মেডিকেল হাসপাতালের উদ্যোগে ৯ দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প সম্পন্ন ব্যবসায়ী আলী হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টায় রিয়াজ মেম্বারের ভাই গ্রেফতার বড়লেখার রাজনীতিতে পরীক্ষিত নেতৃত্ব প্রভাষক ফখরুল ইসলাম বাংলাদেশীদের জন্য দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা উত্তরা বিমান দুর্ঘটনা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫০ : প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব আগস্টে নতুন জুলাই সংবিধান আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক এনসিপির রহমানিয়া টুকা হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সিলেটে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, চলতি বছরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: শিশুর লাশে ভরে গেল ক্যাম্পাস, ২৫ জন আশঙ্কাজনক সিলেট মহানগরীর ১৪নং ওয়ার্ডে তালামীয ইসলামিয়ার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সাংবাদিকের উপরে মিথ্যা মামলা কোম্পানীগঞ্জে ফ্যাসিস্টের দোসরদের পুণর্বাসন নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে বিএনপি নেতার উপর হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার শুরু কুলাউড়ায় বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশির লাশ তুলে নিল ভারত মাহি-শাবাব হত্যার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি যুক্তরাজ্যে ছবি ভাইরাল: নবীগঞ্জে ওয়ালিদের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ কুলাউড়া সীমান্তে আবারও পুশইন, ১৪ জন আটক ওসমানী হাসপাতালে সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ সিলেট সীমান্তে নারী-শিশুসহ ১৬ জনকে আটক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সাবেক এমপি ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে ছাত্রশিবিরের কোরআন কুইজে হিন্দু শিক্ষার্থীর বিজয় সারা দেশে গণজমায়েতের ডাক এনসিপির প্রতিটি রক্তবিন্দুর প্রতিশোধ নেয়া হবে: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি শেষ, রায় ২৭ মে এম.সি কলেজ তালামীযের কাউন্সিল সম্পন্ন সিলেটে এবার বিষ্ফোরক আইনে ২৮৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা মিজানকে জড়িয়ে অপপ্রচারের নিন্দা ও হুমকিদাতাকে গ্রেফতারের দাবি সিলেটে সাবেক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহকর্মীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলা: ষড়যন্ত্রমূলক দাবি পরিবারের সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে বাংলাদেশী নিহত
১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডি

১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডি

Please Share This Post in Your Social Media

Manual1 Ad Code

মো. রফিকুল হক: ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শাহাদত দিবস। বাংলা ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় দিন। জাতিকে অন্যায় ও অত্যাচার, জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে স্বাধীকার-স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত শত সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জীবন-যৌবনের স্বর্ণালী দিনগুলো কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে কাটাতে হয়েছে ২৩টি বছর। সেই ইতিহাসের রাখাল রাজা, বাংলার মুকুটহীন স¤্রাটের সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশে নিজ বাড়িতে উশৃঙ্খল বিপথগামী সেনা সদস্য, দেশী-বিদেশী হায়েনাদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হতে হলো। যা কখনোও চিন্তা কি কল্পনাতেই আসে নাই।
যেখানে পাকিস্তানের লৌহ মানবরা সেই সাহস করে নাই। অথচ পরাধীন বাংলা নয়-স্বাধীন সার্বভৌম বাংলায় তা ঘটানো হলো। ক্ষতিতো এই উশৃঙ্খল বিপথগামী কুলাঙ্গারদের হয় নাই। হয়েছে গোটা জাতির। গোটা বাংলাদেশের, যাকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তিনি শুধু বাংলার বঙ্গবন্ধু ছিলেন না, তিনি বিশ্বের নির্যাতিত সকল দেশের বন্ধু ছিলেন। যে কারণে জাতিসংঘে বিশ্বের নেতারা তাঁকে বিশ্ববন্ধু উপাধি দিয়েছিলেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা এই উপমহাদেশে ভারত ও পাকিস্তান নামক দু’টি ডোমিনিয়ন সৃষ্টি করে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে। তখন পাকিস্তান নামক ডোমিনিয়নের আওতায় পড়েছিল পাকিস্তান। ব্রিটিশের দুইশত বৎসর গোলামীর পর পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের অধীনে আরো চব্বিশ বৎসর পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকার পর ১৯৭১ সালে শত আন্দোলনের সংগ্রাম করার মধ্যে দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের দ্বারা স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাতে ত্রিশ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা প্রাণের ও দু’লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এদেশ পায় স্বাধীনতা। প্রায় এক কোটি সাধারণ মানুষকে শরণার্থী হয়ে পাশের দেশ ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। পাক হানাদার বাহিনীর নির্দয় ও নির্মম হত্যার সামনে টিকে থাকা দায় হয়েছিল, বাংলার নিরন্ন জনগণ শেষ পর্যন্ত পাক-বাহিনীর নিষ্ঠুরতার বদলা নিতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের আহবানে সাড়া দিয়ে হায়েনাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় নিজের জীবনের বিনিময়ে। দীর্ঘ নয় মাস খেয়ে-না খেয়ে মরণপণ যুদ্ধ করে মিত্র বাহিনীর সহযোগীতায় লৌহ মানব ইয়াহিয়া খানের লেলিয়ে দেওয়া নিয়াজী ও টিক্কা খানের দল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন থেকে শুরু করে স্বাধীকার স্বাধীনতা আন্দোলন পর্যন্ত লড়াই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আইয়ুব-ইয়াহিয়া খানকে এদেশ থেকে বিদায় দিয়েছিলেন। সারা বিশ্বে ঝড় উঠেছিল কিভাবে নয় মাসে একটি দেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছিল। শুধু তাই নয়, মিত্র বাহিনীর মতো সাহায্যকারীরা কিভাবে তিন মাসের মাথায় এদেশ ছাড়তে হয়েছিল। বিষ্ময়কর এ জাদুকরকে সম্মান দেওয়ার জন্য গোটা পৃথিবীর রাষ্ট্র নায়কেরা উদগ্রীব হয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের সভ্য পদ লাভ করেন। পৃথিবীর সকল রাষ্ট্র নায়কের সংস্পর্শে যাওয়ার পর সবাই তাঁকে বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছে। তাঁর আজীবন শোষিতের পক্ষে সংগ্রামের বাহবা দিয়েছে।
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার করতে চল্লিশ দশকের শেষ দিক থেকে পঞ্চাশ দশক, ষাটের দশক এবং সত্তর দশকের প্রথমে এসে স্বাধীনতা লাভ করা খুবই ত্যাগের, দুঃখের এবং কষ্টের। বিশেষ করে এই বাংলায় অনেক মহান নেতার জন্ম হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। পাকিস্তানী শাসকদের কাছে একমাত্র মাথা-ব্যথার কারণ ছিলেন শেখ মুজিব। সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। যখনই জনসাধারণকে সংঘটিত করতে উদ্বুদ্ধ হতেন, তখনই শাসকদের স্টিম রোলার তাঁর উপর নেমে আসত। কিন্তু কোন দিনই তিনি সেই আন্দোলন থেকে সরে আসেননি বিধায় বাংলার মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন তাঁর প্রতি ছিল। তাই ৭ মার্চের ভাষণের পর মানুষ আর পিছনে ফিরে তাকায়নি। তাঁর মূল মন্ত্র ছিল ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা কর’। এই বাণীগুলো সারাবাংলায় মন্ত্রমুগ্ধের মত কাজ করে। ফলশ্রুতিতে সাত কোটি বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেশ মাতৃকাকে স্বাধীন করতে অকাতরে প্রাণ দিয়েছেন। কোথায়ও কোন সংশয় ও সন্দেহ ছিল না। ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি বীরের বেশে স্বাধীন বাংলায় ফিরে আসেন। এটাই ছিল তাঁর আজীবন সংগ্রামের ফসল।
প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে নানা সুবর্ণ সুযোগ দানে পাকিস্তানীরা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টের সামনে কবর খুঁড়ে নিক্ষেপের উদ্যোগও নিয়েছিল আইযুব-ইয়াহিয়া খানরা। তিনি বলেছিলেন ‘আমি মুসলমান, মুসলমান একবারই মরে’। আমি বাঙালি বাংলা আমার ভাষা। আমার বাঙালিকে কোনদিন খাটো করব না। ফাঁসির মঞ্চে যেতে আমি প্রস্তুত। তবে আমার লাশটি যেন আমার বাংলাদেশের মানুষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়’। এসব অনড় উক্তিতে পাক-বাহিনী ভঁড়কে যায়।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে মানুষটি জীবনের ২৩টি বছর জেল-জুলুম, অত্যাচার সহ্য করে বাংলার স্বাধীনতা এনেছিল, তাকে কেন হত্যা করা হলো? এমন কি শিশু মাছুম বাচ্চাকে? বাংলার মানুষের সাথে সুসস্পর্ক রাখতে গিয়ে তিনি সুরক্ষিত বঙ্গভবনে না থেকে নিজ বাসা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে থাকতেন। যা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের সুতিকাগার। যাতে মানুষ সহজে তাঁর সাথে দেখা করতে পারে। তিনি বিশ্বাস করতেন প্রতিটি বাঙালিকে। আর শেষ পর্যন্ত কিনা বাংলার এ নরপিচাশরা বিদেশী প্রভুদের স্বার্থে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম আচরণ করল। শুধু বাংলায় নয়, সারা বিশ্ব অবাক হয়ে গেল!
বাঙালিকে তখন বিদেশীরা আর বিশ্বাস করতে পারছিল না। বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে নিয়ে নানা মন্তব্য করতে লাগল। বঙ্গবন্ধু যখন তিল তিল করে দেশকে গড়ে তুলতে লাগলেন, গোটা পৃথিবীকে বাংলাদেশ সাহায্য করার আহবান জানালেন। সাজাতে লাগলেন সোনার বাংলাকে প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি বিভাগে, প্রতিটি বাহিনীকে মনের মাধুরী মিশিয়ে গড়ে তুলতে লাগলেন। প্রথমেই প্রাথমিক শিক্ষাকে সাহসের সহিত জাতীয়করণ করলেন। সামরিক বাহিনীকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে লাগলেন। ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে শুরু করে তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার জায়গা নির্ধারণ করে দিলেন। কিন্তু এ সকল পদক্ষেপ পরাজিতরা মেনে নিতে পারেনি। নয় আজ থেকে বিশ বছর পূর্বে এদেশ এশিয়ার অন্যতম দেশে রূপান্তরিত হতে পারতো। বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতিজ্ঞা করতে হবে, যে নিষ্ঠুর পাষাণরা ও দেশ শত্রুরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে এসব কুলাঙ্গাররা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাদেরকে দ্রুত দেশে এনে আইনের রায় কার্যকর করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী কানাডায় গিয়ে একবার রাষ্ট্র প্রধানকে বলে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনি তার দেশে আছে তাকে যেন ফেরৎ দেন এবং এ ব্যাপারে প্রবাসী যারা আছেন তারা যেন এই ব্যাপারে জনমত সৃষ্টি করে নির্বাহী প্রধানের নিকট স্মারকলিপিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। কোন খুনী কোন দেশের জন্য নিরাপদ নয়। বন্দী বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে দেশে এথনো নিরাপদে খুনিরা আছে, তাদেরকে ফেরত আনতে যেন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
শুধু আগস্ট মাস আসলেই আমরা শাহাদত বার্ষিকী পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করি। কিন্তু যে বিষয় খুনীদের গ্রেফতার করা তা সারা বছর আমরা ভুলে যাই। বিভিন্ন দেশে যে যে অবস্থায় আছে, সেখানেই আন্দোলন গড়ে তুলতে সেই দেশের সরকার প্রধানদের বুঝিয়ে দেন খুনী শুধু খুনী তার আপাদমস্তক খুন বহন করে। তাই সে কোন দেশের জন্য নিরাপদ নয়। পরিশেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মমভাবে নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতাসহ সবাইকে শাহাদাত বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, তারা যেন জান্নাতবাসী হন, আমীন।
লেখক : কলামিস্ট।





Calendar

November 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd
Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code