সিলেট:: প্রায় দেড় মাস পর লন্ডন থেকে ফের বিমানের সরাসরি ফ্লাইট সিলেট এলো। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে বিজি-২০২ ফ্লাইটটি সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানটিতে সবমিলিয়ে ১১৬ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে সিলেটের ৬৫ জন এবং ঢাকার ৫১ জন যাত্রী ছিলেন।
এদিকে, সিলেটে ইমিগ্রেশন করা ৬৫ জন যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তাদের সকলেরই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকায় কাউকে নিতে হয়নি আইসোলেশনে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ।
বিমানের সিলেট জেলা ব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ মজুমদার বলেন, যে সব যাত্রী করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছেন, তারা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাবেন। বিমানবন্দরে বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের প্রতিনিধি ছাড়াও আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন জানান এ বিমান কর্মকর্তা। তিনি জানান, বিমানটি এ বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা অবস্থানের পর ঢাকায় উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। একই বিমানে সিলেট থেকে আরো ৩৪ জন যাত্রী ঢাকায় গেছেন বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, খাদিম বিআরডিটিআইকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে সব প্রবাসী সেখানে থাকতে অনাগ্রহী তাদেরকে হোটেল ফরচুন গার্ডেনে রাখা হবে। সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রতিনিধি লেঃ কর্নেল কামাল পাশা গত রোববার বিকেলে হোটেল ফরচুন গার্ডেন পরিদর্শন করেন। এ সময় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, আটাব গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্টের সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিলও তাদের সাথে ছিলেন। ।
উল্লেখ্য, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ২১ জুন লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়। এরপর ২৫ জুলাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিমানে যারা লন্ডন থেকে সিলেট আসবেন ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বোর্ডিং পাস নিয়ে আসতে হবে সিলেটে। করোনা পরিস্থিতি ও সিলেটে আইসোলেশন সেন্টার না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বিমান এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটিদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায়ও সমালোচনার ঝড় উঠে। বিমানের এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট চালুর দাবিতে জিএসসিসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। এ নিয়ে সিলেটেও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও সিলেটের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট চালুর দাবি জানানো হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে।
এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুলাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং ফ্লাইট ফের চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।