সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটে শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং ছিল বাংলাদেশের। এক প্রান্তে কেউ থিতু হতে না পারলেও অপর প্রান্তে আস্থার সাথেই খেলছিলেন লিটন দাস। ব্যাটে ছুটিয়েছেন রানের ফোয়ারা। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ গড়েছে ৩২১ রানের বিশাল সংগ্রহ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় শতক তুলে নিতে লিটন বল খেলেছেন ৯৫টি। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এর দুই বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পথে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ১০ চার ও ১ ছক্কা। শেষ পর্যন্ত খেলেন ১২৬ রানের ইনিংস, যা তার ক্যারিয়ার সেরাও। ডান পায়ের পেশিতে টান পড়ে রিটায়ার্ড হার্ট হলেও তার আগেই গড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ইনিংসের ভিত।
এর আগে রোববার (১ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দলপতির সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক প্রমাণ করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৬০ রান। ব্যক্তিগত ২৪ রানে উইসলি মাধেভেরের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তামিম। ম্যাচের শুরু থেকেই খোলসবন্দী তামিম একটু যেন অস্বস্তিতেই ছিলেন। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি, তবে রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাট স্পর্শ করেনি বল।
তবে তামিম ফিরে গেলেও থামেননি লিটন। নাজমুলকে সাথে নিয়ে গড়েছেন ৮০ রানের জুটি। দলীয় ১৪০ রানের মাথায় আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট হন নাজমুল হোসেন শান্ত। মুতমবডজির বল প্যাডে লাগলে জিম্বাবুইয়ানদের আপিলে সাড়া দিয়ে আঙ্গুল তুলে দেন আম্পায়ার। পরে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, ইম্প্যাক্ট ছিল স্টাম্পের বাইরে। বলটি কোনোভাবেই স্টাম্পে লাগছিল না। তবে রিভিউ ছিল না বলে ফিরে যেতে হয় নাজমুলকে।
নাজমুল ফিরে গেলে মুশফিকের সাথে জুটি গড়েন লিটন। ৪২ রানের জুটি ভাঙ্গে দলীয় ১৮২ রানে। জিম্বাবুইয়ান পেসার তিরিপানোর অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলকে অহেতুক খোঁচা দিয়ে কট বিহাইন্ড হন মুশফিক। অবশ্য তার ওভারের প্রথম বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। তিরিপানোর বলে চার হাঁকিয়ে শতরান পূর্ণ করেন। এরপর আরো আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ওপেনার।
ইনিংসের ৩৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছয় হাঁকানোর পরই পায়ের পেশিতে টান পড়ে। ড্রেসিংরুমে ফিরে যান ১২৬ রান করে। ১০৫ বলের ইনিংসে চারের মার ছিল ১৩টি। সাথে হাঁকিয়েছেন দু’টি ছক্কা। লিটনের ফিরে যাবার পর মাহমুদুল্লাহর সাথে জুটি গড়েন মিথুন। ২৮ বলে ৩২ করে ক্রিস্টোফার এমপফুর বলে মাহমুদুল্লাহ এলবিডব্লিউ হলে ভাঙ্গে ৬৮ রানের জুটি।
ফিফটি তুলে ফিরে যান মিথুনও। এমপফুর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যাবার আগে ৪১ বল খেলে ৫ চার ও এক ছয়ে করেন ৫০ রান। শেষদিকে সাইফ উদ্দিনের ঝড়ো ২৮ রানে একসময় সাড়ে ৩শ’র কাছাকাছি স্কোরের সম্ভাবনা গড়েও বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩২১ রানে।