বড়লেখার :: বড়লেখা উপজেলার বর্ণী ইউনিয়নের মুদৎপুর গ্রামে ওরসের নামে গত মঙ্গলবার রাত থেকে ৩ দিনব্যাপি বসানো হয় যাত্রা, বাউল গান, অশ্লীল নৃত্যের রমরমা আসর। নাচ-গানের আসরের জন্য বিশাল মাঠ জুড়ে বাধা হয় প্যান্ডেল। যুবতী মেয়েদের দিয়ে ঢোল, তবলা বাজিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে চলে নাচ গান। এসব অসামাজিক কর্মকান্ডে বিপথগামী হচ্ছে এলাকার যুবসমাজ। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অবশেষে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ ওরসের নামে চালানো নাচ-গানের আসর বন্ধ করেছে।
জানা গেছে, উপজেলার বর্ণী ইউনিয়নের মুদৎপুর গ্রামের মস্তফা উদ্দিনের স্ত্রী কথিত হাজিয়া রাণী ফড়িঙ্গা পীরাণী বাবা শাহ মাদার, সৈয়দ ইয়াকুব শাহ, শদাই শাহ ও বদাই শাহর নামে ওরসের আয়োজন করেন। সন্ধায় আল্লাহ ও রাসূলের নাম দিয়ে ওরস শুরু হলেও রাত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে স্টেজে পালাক্রমে উঠতি বয়সী সুন্দরী নারীদের আগমন ঘটে। তারা শুরুতে বিভিন্ন মারিফতি ও বাউল গান গাইলেও রাত বারোটার পরেই পাল্টে যায় এ চিত্র। শরীর দুলিয়ে যৌন উত্তেজনাকর নানা গান পরিবেশন করা হয়। মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া এই নাচ গানের আসর চলার কথা শুক্রবার ভোর পর্যন্ত। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগে বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ গানের আসর বন্ধ করে দিয়েছে।
সরেজমিন বুধবার রাতে ওরসের আসরে গিয়ে স্টেজের সম্মুখ ভাগজুড়ে উঠতি বয়সী যুবকদের ভিড় দেখা যায়। অপরদিকে স্টেজে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে নৃত্য করছে উঠতি যুবতীরা। দর্শক সারি থেকে উচ্চ আওয়াজ দিয়ে টাকার নোট উঁচু করে থাকতে দেখা যায় যুবকদের। হেলে দুলে গায়িকাদের টাকা দেয়ার সারিতে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিধি ও শাসক দলের কদিতপয় নেতাও। গায়িকারা স্টেজ থেকে নেমে নেচেগেয়ে দর্শকদের মন ভোলাতে ভোলাতে টাকা গ্রহণ করে। মূল স্টেজের একপাশে দর্শক সারিতে পুরুষ ও অন্য পাশে রয়েছেন যুবতী নারীরা। স্টেজে লাগানো ব্যানারে আয়োজক কমিটির সদস্যদের ছবিসহ নাম টানানো ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, কথিত এই হাজিয়া রাণী ফড়িঙ্গা পীরাণী ওরসের নামে প্রতিবছর বাণিজ্য করে থাকেন, তার সাথে রয়েছে এরাকার প্রভাবশালী একটি মহল। ওরস প্রাঙ্গণের আশে পাশে চলে মাদকসেবীদের আনাগোনা। এতে এলাকার যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। যার জন্য এলাকার শান্তি শৃঙ্খলাও বিনষ্ট হচ্ছে। তারা ৯৯৯ নাইনে ফোন করে এ অশ্লীলতার অভিযোগ করায় পুলিশ আসে।
এবিষয়ে হাজিয়া রাণী পীরানী মুঠোফোনে জানান, এই আসর আধ্যাত্মিক লাইনের। এখানে কোন অশ্লীলতা নাই। আমি হাজ্বি আমার ছেলেও হাজ্বি। কিছু মানুষ শত্রুতা করে এমন বাজে কথা বলতেছে।
বর্নি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মিন্টু চৌধুরী জানান, ওই পীরানী মহিলা প্রতি বর্ছ ওরস করে থাকেন। নাচগানের আসরের অভিযোগ ওঠার পরই পুলিশ তা বন্ধ করে দিয়েছে।