Manual3 Ad Code

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়ের খালোমুখবাজার হাজী মোহাম্মদ রাজা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনিয়মের মাধ্যমে এমপিওভুক্ত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক রান্টু রঞ্জন রায়। সে নারী নির্যাতন-যৌন হয়রানী মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী। এছাড়াও একাধিক বিয়েসহ নানা অভিযোগ থাকা সত্বেও সে এমপিওভুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে তথ্য গোপন করার অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত এই শিক্ষক রান্টু রঞ্জন রায় একটি প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে একের পর এক প্রতিষ্ঠাকালীন সিনিয়র শিক্ষকদের তাড়িয়ে ছল ছাতুরির আশ্রয় নিয়ে সে একক ভাবে বিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ করছে।

Manual1 Ad Code

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রান্টু রঞ্জন রায় বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে এবং নারী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালে প্রথম স্ত্রী অর্পনা রায় তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে শাহপরান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রান্টু রঞ্জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। এই মামালায় কারাভোগের পর এখন জামিনে রয়েছেন রান্টু। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যালে বিচারাধীন (যুক্তি তর্ক) রয়েছে। মামলা নং জিআর ৪৩১/১২।

Manual3 Ad Code

অন্যদিকে প্রথম স্ত্রীকে রেখে নান্টু রঞ্জন রায় ২০১৫ সালে ১ জুন ২য় বিয়ে করেন নগরীর মুজমাদার পাড়ার শ্যাম সুন্দর দাস এর মেয়ে দিপালী রানী দাসকে। কিছু দিন পর দিপালীর উপরও নেমে আসে নির্যাতন। এরপর দিপালীও প্রাণের ভয়ে ছেড়ে যান রান্টু রঞ্জনকে। এছাড়াও নামে বেনামে একাধিক বিয়েরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া তার বর্তমান প্রতিষ্ঠান হাজী মোহাম্মদ রাজা চৌধুরী উচ্চ । তখন বিদ্যালয়ের এক মহিলা শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে রান্টু রঞ্জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। সে সময় বিষয়টি নিয়ে তুলপাড় শুরু হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহমকর্মীদের কেউ তার অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গেলেই নানা নাটক সাজিয়ে শিক্ষকদের তাড়িয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এর মধ্যে স্কুল ছাত্রীর অভিভাবকদের ম্যানেজ করে একাধিক শিক্ষককে বেকায়দায় ফেলে বিদ্যালয় ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন রান্টু। এমনকি হাজী মোহাম্মদ রাজা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিনকে জোরপূর্বক বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অপরদিকে বতর্মান প্রধান শিক্ষক রান্টু রঞ্জন রায় একবার বিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। একাধিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরিও করেন। পরে পুনরায় তিনি এই বিদ্যালয়ে ফিরে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক থেকে সহ প্রধান শিক্ষক ও বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করে আছেন। বিদ্যালয়ের অপর একজন সিনিয়র শিক্ষক মো. ইমাদ উদ্দিন ছুটির আবেদন থাকা অবস্থায় উক্ত পদে একজন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে রান্টু রঞ্জন এর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় একটি মামলাও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও রান্টু রঞ্জন এর প্রধান শিক্ষক পদ অবৈধ ঘোষণার দাবিতে আদালতে মামলা চলছে।

Manual5 Ad Code

আলাপকালে প্রধান শিক্ষক রান্টু রঞ্জন রায় একটি মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী বলে স্বীকার করেন। একাধিক বিয়ের বিষয়টি তার ব্যক্তিগত বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তিতে তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলা কোন বাধা নয়,আমার পারিবারিক বিষয় আগের ছিল এখন নেই।

দক্ষিণ সুরমা উপজেলা শিক্ষা অফিসার সত্য ব্রত রায় জানান, ঘোষিত এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে কাজ চলছে। তবে খুব শীঘ্রই একটি নির্দেশনা আসবে। ঘোষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ব্যাপারে সেই নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। তবে মামলার আসামী বা চার্জশীটভুক্ত অথবা আদালত কর্তৃক দন্ডিত হলে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সরকারি বিধি অনুসরণ করা হবে বলে তিনি জানান।