Please Share This Post in Your Social Media
বড়লেখা প্রতিনিধি :: বড়লেখায় উপজেলার দাসের বাজার ইউপির অহিরকুঞ্জি গ্রামে সামাজিক বিয়ে ছাড়াই ৫ বছর ধরে স্বামী বিরেন্দ্র বিশ্বাস (৫৫) অন্য তরুনীর সাথে ঘর সংসার, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করায় অতিষ্ট হয়ে বিষপান করেন সুনীতি বিশ্বাস (৫০) নামে এক গৃহবধূ। দুই দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তবে নিহত সুনীতি বিশ্বাসের মেয়ে ছামেলি রানী বিশ্বাসের দাবী বাবা ও তার সাথে অবৈধভাবে বসবাসকারী তরুনী রিশনা বিশ্বাস মুখে বিষ ঢেলে তার মাকে হত্যা করেছে।
এলাকাবাসী ও হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার দাসেরবাজার ইউপির অহিরকুঞ্জি গ্রামের বিরেন্দ্র বিশ্বাস প্রায় ৫ বছর ধরে প্রথম স্ত্রী সুনীতি বিশ্বাসের বিনা অনুমতিতে সামাজিক বিয়ে ছাড়াই বিশনা বিশ্বাস নামে এক তরুনীকে নিয়ে ঘরসংসার করছেন। তাদের ৪ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। বিরেন্দ্র বিশ্বাস প্রথম স্ত্রী সুনীতি বিশ্বাসের ভরনপোষন করতেন না। এ নিয়ে অশান্তি চলছিল। প্রায়ই সুনীতি বিশ্বাসের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন স্বামী বিরেন্দ্র বিশ্বাস। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে গৃহবধু সুনীতি বিশ্বাস বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে বিষপান করেন। মুমুর্ষু অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেফার করেন। কিন্তু স্বামী বিরেন্দ্র তাকে সিলেটে না নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও গ্রামের গন্যমান্যরা হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাপ প্রয়োগ করলে বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত এগারোটার দিকে সেখানে সুনীতি বিশ্বাসের মৃত্যু ঘটে।
নিহতের মেয়ে ছামেলি রানী বিশ্বাস (৩০) জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে মায়ের লাশ নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তার অভিযোগ বাবা ও তার অবৈধ স্ত্রী জোরপুর্বক মুখে বিষ ঢেলে তার মাকে হত্যা করেছে। প্রায়ই টেলিফোনে তাদের নির্যাতনের কথা মা তাকে জানাতেন। অন্তেষ্টীক্রিয়া শেষে তিনি থানায় তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবেন।
নিহতের স্বামী বিরেন্দ্র বিশ্বাস জানান, ঘটনার সময় তিনি ক্ষেতে কাজ করছিলেন। খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখেন অবশ অবস্থায় নাকে মুখে ফেনা বের হচ্ছে। হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা বলেন তিনি বিষ পান করেছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন জানান, স্বামীর অনেক সম্পত্তি থাকা স্বত্তেও ঘটনার দুইদিন আগে সুনীতি বিশ্বাস বয়স্ক ভাতায় নাম দেয়ার জন্য তার গিয়েছিলেন। তিনি আশ্বাসও দিয়েছিলেন। এরমধ্যে বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা রহস্যজনক। তবে অনেকেই ইঙ্গিত করেছে পথের কাটা সরিয়ে দিয়ে দিতে বিরেন্দ্র বিশ্বাস ও তার লিভটুগেদারে থাকা তরুনী পরিকল্পিতভাবে সুনীতিকে হত্যা করেছে।
Related