সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রায় ১৪ মাস পর স্বপ্না বেগম খুনের মূল রহস্য উদঘাটন হয়েছে। খুনী পরকীয়া প্রেমিক আজাদ মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিরাপরাধ স্বপ্না বেগমের স্বামী গফুর মিয়া অদ্যবধি পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল হাজতে শান্তি ভোগ করছেন। গতকাল শনিবার দুপুর ১টায় শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ এ কক্ষে এক ব্রিফিংএ একথা জানান অফিসার্স ইনচার্জ কে.এম নজরুল।
তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, ২০১৭ সালের ১ আগষ্ট শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের সাইটুলা গ্রামে স্বপ্না বেগম (৩৫) নামে এক মহিলাকে গলাটিপে হত্যা করে ঘরের ভিতর ফেলে রাখা হয়। এঘটনায় ভিকটিমের বোন স্বপ্না বেগমের স্বামী গফুর মিয়া সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামী করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দেয়।
এ ঘটনায় মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় ইন্সপেক্টর অপারেশন মো: সোহেল রানাকে। তিনি ওই মামলায় স্বপ্না বেগমের স্বামী গফুর মিয়াকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। মামলার তদন্তকারী ইন্সপেক্টর অপারেশন, মোঃ সোহেল রানা ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্ঠা চালান এবং এক পর্যায়ে প্রকৃত খুনীকে সনাক্ত করেন। এক পর্যায়ে গত শুক্রবার (৭/৯/২০১৮)স্বপ্না বেগমের পরকিয়া প্রেমিক সাইটুলা এলাকার মৃত হাবিব মিয়ার পুত্র আজাদ মিয়া (২৮) কে আটক করেন।
পুলিশ জানায়, ভিকটিম স্বপ্না বেগমের পরকীয়া প্রেমিক আজাদ মিয়া ঘটনার পর থেকে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। গত ৭ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেফতার করে শ্রীমঙ্গল থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আজাদ জানায়, পাওনা ২ হাজার টাকার জন্য স্বপ্না বেগম কে গলাটিপে হত্যা করে।
আজাদ পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে স্বপ্নার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে স্বপ্নার সাথে তার স্বামীর পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হলে আজাদ স্বপ্না ও তার দুই শিশু সন্তানকে তার পিতার বাড়ি রাজনগরে পাঠিয়ে দিতে সাহায্য করে। বিষয়টি জানার পর গফুর মিয়া আজাদের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়। এর ৫ মাস পর স্বপ্নাকে নিয়ে আজাদ নারায়নগঞ্জের আদমজী এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরী নিয়ে উভয়ই স্বামী স্ত্রীর ন্যায় বসবাস করতে থাকে। এভাবে দেড় বছর কাটানোর পর স্বপ্নার স্বামীর বাড়ির লোকজনদের সাথে আপোষ রফা করে আজাদকে ছেড়ে আবার স্বামীর বাড়ি শ্রীমঙ্গলে ফিসে আসে। পরে আজাদও চলে আসে। গত বছরের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০ টায় আজাদ মিয়া কৌশলে স্বপ্নাকে ঘর থেকে বাহিরে এনে একটি কাঠাল গাছের নিচে ডেকে নেয়। এসময় আজাদ তাকে ছেড়ে আসা এবং তার সাথে আবারো শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য পিড়াপীড়ি করে। স্বপ্না এতে রাজী না হওয়ায় আজাদ তার পাওয়ান ২ হাজার টাকা দাবী করে। স্বপ্না তা অস্বীকার করলে আজাদ স্বপ্নাকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ টেনে হিছরে ঘরের দরজার সামনে রেখে পালিয়ে যায় বলে স্বীকার করে।
মামলার তদন্তকারী ইন্সপেক্টর অপারেশন, মোঃ সোহেল রানা জানান, পরিবারের সদস্যদের অসহযোগীতার করণে মুল অপরাধীকে সনাক্ত করতে একটু দীর্ঘ সময় লেগেছে। প্রেস বিফ্রিং মামলার তদন্তকারী ইন্সপেক্টর অপারেশন, মোঃ সোহেল রানা, এসআই রফিকসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।