June 28, 2025, 2:30 pm

সংবাদ শিরোনাম :
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার শুরু কুলাউড়ায় বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশির লাশ তুলে নিল ভারত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আগত শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে এলো এমসি কলেজে তালামীয যুক্তরাজ্যে ছবি ভাইরাল: নবীগঞ্জে ওয়ালিদের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ কুলাউড়া সীমান্তে আবারও পুশইন, ১৪ জন আটক ওসমানী হাসপাতালে সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ সিলেট সীমান্তে নারী-শিশুসহ ১৬ জনকে আটক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সাবেক এমপি ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে ছাত্রশিবিরের কোরআন কুইজে হিন্দু শিক্ষার্থীর বিজয় সারা দেশে গণজমায়েতের ডাক এনসিপির প্রতিটি রক্তবিন্দুর প্রতিশোধ নেয়া হবে: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি শেষ, রায় ২৭ মে এম.সি কলেজ তালামীযের কাউন্সিল সম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা মিজানকে জড়িয়ে অপপ্রচারের নিন্দা ও হুমকিদাতাকে গ্রেফতারের দাবি সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে বাংলাদেশী নিহত দিরাইয়ে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৬ ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত কৃষকদের কথা সবার চিন্তা করতে হবে – সুনামগঞ্জে কৃষি উপদেষ্টা শাবিতে ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম তামাবিল দিয়ে ১৪ বাংলাদেশিকে ফেরত দিলো ভারত এসএসসি পরীক্ষা > সিলেট বোর্ডে অংশ নিচ্ছে ১ লাখ ২ হাজার ৮৭২ জন পরীক্ষার্থী বড়লেখায় মসজিদের ভূমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১০ : ৭ জনের নামে থানায় মামলা বড়লেখা উপজেলাসহ দেশ ও প্রবাসীদের ঈদের শুভেচছা জানিয়েছেন জননেতা সাইদুল ইসলাম রহমানীয়ায় দারুল কিরাতের বিদায়ী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ বড়লেখায়  যুবদল নেতা নুরুল তাপাদারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কুলাউড়ায় বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটের অভিযোগ আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে, এমনটাই আশাবাদ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বড়লেখায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু গভীর রাতে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘর থেকে উপজেলা শিবির সেক্রেটারি গ্রেপ্তার! আ. লীগকে নিষিদ্ধ লাকীকে গ্রেফতারের দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের বিক্ষোভ
সাদ্দামের পতনের পর ইরাকে বিপর্যয়

সাদ্দামের পতনের পর ইরাকে বিপর্যয়

Please Share This Post in Your Social Media

নিউজ ডেস্ক : ইরাকের রাজধানী বাগদাদের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা টাইগ্রিস নদীতে লুকিয়ে আছে বহু গোপন তথ্য। এই নদীতে কতো মৃতদেহ ছুড়ে ফেলা হয়েছে তার হিসাব কেউ জানে না। বিশ্বের এতো সমৃদ্ধ ও প্রাচীন ব্যাবিলন সভ্যতা যেভাবে এরকম বিপর্যয়ের মধ্যে পতিত হলো – যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সামরিক অভিযানের ২০ বছর পরেও তা মেনে নেয়া কঠিন।

আজকের ইরাকে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, কিন্তু দেশটিতে এখনও বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটছে, তারা এক অপরকে হত্যা করছে, গাড়িতে বোমা পেতে হামলা চালানো হচ্ছে, শিয়া ও সুন্নি মিলিশিয়াদের মধ্যে চরমপন্থার উদ্ভব ঘটছে। এসব সমস্যার কিছু কিছু কারণ এই সহস্রাব্দের শুরুর দিকে নিহিত, যেই সময়ে আমেরিকান শক্তির কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। খবর বিবিসি

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপ আল-কায়দা ১১ই সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে হামলা চালায় যা নাইন ইলেভেন নামে পরিচিত। এই হামলার পরপরই ২০০১ সালে ওয়াশিংটন আফগানিস্তানে আল-কায়দার ঘাঁটিতে আক্রমণ চালানোর জন্যে একটি জোট গঠন করে। এই অভিযানের ‘সাফল্যের’ পর খুব শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি পড়ে ইরাকের ওপর।

ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানি বলছেন, তিনি এবং তার একজন প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতিক গোপনে ওয়াশিংটন সফরের জন্য একটি আমন্ত্রণ পান ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে। আমরা একমত হই বা না-হই, আমরা এতে অংশ নেই কি না-নেই, সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

বারজানি জানান, সেসময় ওয়াশিংটন একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল এবং তাতে অংশ নেওয়ার জন্য ইরাকের বেশ কিছু বিরোধী নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর দায়িত্ব গ্রহণের জন্যে সম্ভাব্য একটি সরকারকে প্রস্তুত রাখা। এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় লন্ডনে, ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে যেখানে ইরাকে একটি কেন্দ্রীয় ও গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের ব্যাপারে সবাই সম্মত হয়। কিন্তু বারজানি বলছেন, তিনি কিছু সতর্ক সঙ্কেত আঁচ করতে পারছিলেন যখন তিনি দেখলেন যে কিছু কিছু শিয়া দল তাদের ‘প্রতিশোধ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা’ প্রকাশ করছে।

সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে ইরাকে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া মুসলিম জনগোষ্ঠী সহিংস দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য তখন ইরাকে হামলার পেছনে দেশটির হাতে ‘গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে’ এরকম একটি অজুহাত দাঁড় করায়, কিন্তু সেই অস্ত্রের সন্ধান কখনোই পাওয়া যায়নি।

ইরাকে সামরিক অভিযান শুরু হয় ২০০৩ সালের ১৯শে মার্চ। রাজধানী বাগদাদে তীব্র বিমান হামলার মধ্য দিয়ে এই আক্রমণ শুরু হয়। তিন সপ্তাহ পর ৯ই এপ্রিল সাদ্দাম হোসেনে শেষবারের মতো বাগদাদের সুন্নি অধ্যুষিত এলাকা আধামিয়াতে যান। মার্কিন সৈন্যরা ইতোমধ্যে শহরের ভেতরে প্রবেশ করেছে। সাদ্দাম হোসেনের মূর্তি টেনে নামানোর তখনও কয়েক ঘণ্টা বাকি।

সেসময় বাগদাদে ছিলেন ইরাকি সাংবাদিক দিয়ার আল-ওমারি। তিনি বলেন যেসব ইরাকি ওই চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন তারা শুরুতে মূর্তিটিকে টেনে নামাতে পারছিলেন না। তখন আমেরিকান সৈন্যরা একটি সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে আসে এই কাজে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু মূর্তির নিচের অংশ বা ভিত্তি এবং সাদ্দাম হোসেনের পা ভূপৃষ্ঠের সাথে লেগে ছিল। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছিল আগামীতে দেশটিতে কী ঘটতে যাচ্ছে- সাদ্দাম হোসেনের ‘বাথিস্ট সরকারের’ শেকড় প্রোথিত ছিল ইরাকি সমাজের অনেক গভীরে, যা কয়েক দশক ধরে তৈরি হয়েছে।

বাগদাদের পতনের পর ইরাকি প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবার আনবার প্রদেশের উদ্দেশ্যে রাজধানী ছেড়ে চলে যান। ইরাকি সুন্নি নেতা আলী হাতেম সুলেইমান সাদ্দাম হোসেনের এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, আনবার প্রদেশ সুন্নিদের শক্ত ঘাঁটি। ইরাকে আরব জনগোষ্ঠীরও প্রধান ঘাঁটি এই প্রদেশ। একারণে এই অঞ্চল তার জন্য নিরাপদ ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট তখন ইরাকি সমাজকে পুরোপুরি ‘বাথমুক্ত’ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ইরাকের রাজনীতি ও সমাজ থেকে তারা সাদ্দাম হোসেনের দলকে নির্মূল করার উদ্যোগ নেয়। ইরাকে যেকোনো চাকরি পাওয়া কিম্বা পড়ালেখার জন্য তার দলের সদস্য হওয়ার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইরাকের সামরিক, নিরাপত্তা ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি ধ্বসে পড়তে শুরু করে।

ইরাকি সুন্নি নেতা আলী হাতেম সুলেইমান বলেন, এই প্রক্রিয়ায় সুন্নিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়, তাদেরকে সবকিছুর বাইরে রাখা হয়, এবং তাদের ভূমিকা খর্ব করা হয়। তাদেরকে সাদ্দাম হোসেনের সমর্থক হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এই ধারণা সত্য নয়। এর ফলে ইরাকের সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তারা চরমপন্থী সংগঠনে যোগ দেয়। আল-কায়দার পুনরুত্থানের সুযোগ তৈরি হয়, যারা দেশটিতে বিদ্রোহী তৎপরতা শুরু করে যা কয়েক বছর ধরে অব্যাহত ছিল।

এর মধ্যে আমেরিকান সৈন্যরা ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেফতার করে। এর তিন বছর পর মানবতা-বিরোধী অপরাধের অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি কার্যকর করা হয় ঈদুল আজহার দিন, ভোর বেলায়, যা ইসলামের একটি পবিত্র দিন এবং যেদিন মুসলিমরা কুরবানি দিয়ে থাকে। এই দিনে তাকে ফাঁসি দেয়ার ঘটনা ইরাকের সুন্নি অধ্যুষিত প্রদেশগুলোতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। বহু আর দেশেও ক্ষোভ তৈরি হয়।

সাবেক ইরাকি প্রধানমন্ত্রী নূরি আল-মালিকি, যাকে ইরানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখা হয়, বিবিসির আরবি বিভাগকে বলেছিলেন ইরাকিদের ক্ষুব্ধ করে হলেও তিনি তার শক্তিমত্তা দেখাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। তিন একজন সুন্নি আরব নেতা (সাদ্দাম), একজন শিয়া নেতা (মালিকি) কীভাবে তাকে শাসন করবে?” বলেন আল-মালিকি।

সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুদণ্ড কেন এতো দ্রুত কার্যকর হয় তার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে আল-মালিকি বলেছেন কেউ যাতে আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে না পারে সেজন্যই তা করা হয়েছে। তার ভয় ছিল যে সাদ্দাম হোসেনকে হয়তো বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি মুক্তি পেয়ে যাবেন। কিছু উপসাগরীয় দেশ সাদ্দামকে বাঁচাতে চেয়েছিল এবং সেটাই ছিল ওই সময় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে তাড়াহুড়ো করার কারণ” – সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশগুলো আমেরিকান কর্তৃপক্ষের ওপরও চাপ প্রয়োগ করছিল। কিন্তু সেসময় ইরাকের একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এর বিপরীত চিত্র তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সাদ্দামকে যখন ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন তিনি ভয়ে কাঁপছিলেন।

নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে আল-কায়দার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সুন্নিদের বিভিন্ন গোত্রকে প্রভাবিত করে এবং শেষ পর্যন্ত সন্ত্রাসী গ্রুপটিকে পরাজিত করা সম্ভব হয়। ২০১১ সালের মধ্যে বেশিরভাগ আমেরিকান ও ব্রিটিশ সৈন্য ইরাক ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আল-মালিকির নীতিমালার বিরুদ্ধে শহুরে সুন্নিদের ক্ষোভ বৃদ্ধি পেতে থাকে। বহু সুন্নি তরুণ তখন ফাল্লুজার কাছে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়। সুন্নি নেতা আলী হাতেম সুলেইমানি তাদের ক্ষোভের পেছনে এই কারণগুলোর কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, সুন্নিদের ওপর প্রত্যাঘাত করা হয়েছে, অন্যায় বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে, ইরাকি আইন ও বিচার বিভাগ নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আল-মালিকি। তিনি বলেন এই অবস্থান কর্মসূচির পেছনে ছিল আল-কায়দা। কারণ তারা ফিরে আসার সুযোগ খুঁজছিল।

সাবেক কুর্দি প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানি বলেন, ২০১৩ সালের শেষের দিকে আল-মালিকি বিভিন্ন চত্বরে হামলা করার জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন। এর জের ধরে ইরাকি সীমান্তের ভেতরে ও বাইরে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। আল-কায়দা নতুন রূপে ফিরে আসে। তাদের ক্ষমতা ও নিষ্ঠুরতাও বৃদ্ধি পায়। বেশ কিছু শহর চলে যায় ইসলামিক স্টেটের নিয়ন্ত্রণে। ইরাকি সেনাবাহিনী দৃশ্যত রাতারাতি উধাও হয়ে যায়। ১০ বছর ধরে যে সেনাবাহিনী গঠন করা হয়েছিল, সেটা মাত্র ১০ ঘণ্টায় জলীয় বাষ্পের মতো উবে যায়।

আইএসের অগ্রসর হওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে কিভাবে পুরো সামরিক বাহিনীর কমান্ডারদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো – সেবিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী আল-মালিকি। তার পর প্রধানমন্ত্রী হন হায়দার আল-আবাদি – যিনি এসব সমস্যা নিয়ে আরো খোলাখুলি কথা বলেন।

হায়দার আল-আবাদি বলেন, তখন বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ দেখা দিয়েছিল – যা ছিল বিরাট এক সমস্যা। আইএস ছিল একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী, কিন্তু রাষ্ট্রব্যবস্থাও একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীতে পরিণত হলো। তবে আল-মালিকির গৃহীত নীতিমালা একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর স্বার্থে তৈরি হয়েছে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন আল-আবাদি। কিছু কিছু সুন্নি শহর কেন ইসলামিক স্টেটকে স্বাগত জানিয়েছিল – সেবিষয়ে তার নিজস্ব ব্যাখ্যা রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত। ইরাকি নাগরিকরা এই বাহিনীর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে যে কারণে তারা নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য অন্যদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ছিল।

তিনি বলেন, ইরাকি নিরাপত্তা ও সামরিক বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে চার বছর পর আইএসকে পরাজিত করা সম্ভব হয়। কিন্তু এসব যুদ্ধের ফলে সুন্নি প্রদেশগুলোতে গভীর ক্ষত তৈরি হয়, যা সুন্নি মুসলিমদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর মসুলে খুব সহজেই চোখে পড়ে। মসুল শহরের অন্যতম প্রাচীন একটি মসজিদের শেখ বলছিলেন ‘অতীতে ফিরে যাওয়ার’ কথা। সাদ্দাম হোসেনের মতো নেতারই ইরাক শাসন করা উচিত। এসময় তার কণ্ঠে কিছুটা যন্ত্রণা মেশানো ছিল। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ার কারণে তিনি তার পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন।

হায়দার আল-আবাদি বলেন, এই দেশে এখন যা হচ্ছে – তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আমেরিকা বলে যে তারা ইরাককে স্বাধীন করেছে, কিন্তু তারা আসলে দেশটিকে ইরানের হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু ইরাকের মানুষ যখন নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছে – তখন কে কি নিয়ন্ত্রণ করছে সেটা তাদের কাছে একাডেমিক বিতর্কের বিষয়। ইরাকের জনগোষ্ঠী তরুণ এবং বেকার। ইরাকের মতো একটি দেশকে নিয়ে যদি খেলা করা না হতো, তাহলে কল্পনা করে দেখুন সমৃদ্ধশালী এই দেশটি আজ কোথায় গিয়ে পৌঁছাত!





Calendar

June 2025
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd