সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: বরিশাল পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার সবকটি ধাপ পার হওয়ার পরও স্থায়ী ঠিকানা জটিলতায় চাকরি হচ্ছে না বাবা হারা আছপিয়ার। পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজির সঙ্গে দেখা করেও কোনো কাজ হয়নি। শেষে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হয় তাকে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
আছপিয়ার চাকরি না হলে অনশনে বসার ঘোষণা দিয়েছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। চাকরি না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে করা একটি প্রতিবাদী পোস্টে মন্তব্য করে তিনি এই ঘোষণা দেন।পরে ওই আইডি থেকে নির্মলেন্দু গুণের পুরো বক্তব্য পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘ভূমিহীন হলে পুলিশের চাকরি করা যাবে না—এ রকম একটা আইন আছে, সেটাই তো জানতাম না। মেধা তালিকায় পঞ্চম হয়েও ভূমিহীন বলে বরিশালের আছপিয়া চাকরি পাবে না, এটা হতে পারে না। হতে দেওয়া যায় না। এই আইন বাতিল কিংবা সংশোধন করে তাকে চাকরি দেওয়া হোক। নইলে আমি অনশনে বসব।’এদিকে নির্মলেন্দু গুণের অনশনে বসার ঘোষণাকে অনেকে সমর্থন জানিয়েছেন। এমনকি তার সঙ্গে অনশনে বসার আগ্রহও দেখিয়েছেন। জানা গেছে, বরিশালের হিজলা উপজেলার সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেন মৃত সফিকুল ইসলামের মেয়ে আছপিয়া ইসলাম কাজল। মা, তিন বোন ও এক ভাইয়ের সঙ্গে আছপিয়া বড়জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের খুন্না-গোবিন্দপুর গ্রামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর জমিতে আশ্রিত হিসেবে বসবাস করছেন। তার বড় ভাই ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। আর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ সদর দফতর। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল জেলা থেকে টিআরসি পদে ৭ জন নারী ও ৪১ জন পুরুষ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী হিজলা থেকে অনলাইনে আবেদন করেন আছপিয়া ইসলাম। ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও কৃতকার্য হন। ২৪ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আছপিয়া।২৬ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে কৃতকার্য হন আছপিয়া। তবে চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নিয়োগ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। কারণ তিনি বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন। এই নিয়োগ পাওয়ার অন্যতম শর্ত ছিল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। এ ব্যাপারে বরিশালের পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, যেহেতু আছপিয়া সাতটি স্তর পাস করেছে। আমরা তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
বিএ/১০ ডিসেম্বর