সিলেটের বিয়ানীবাজারে রাজনৈতিক হয়রানির অভিযোগে আলোচনায় এসেছে ‘গায়েবি মামলা’। প্রবাসে থাকা পাঁচজন বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে হাজার মাইল দূরে বিদেশে থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে দেশে সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা গেছে, লন্ডন প্রবাসী মাহবুব হাসান দুলাল, যিনি বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক প্রচার সম্পাদক, ২০২২ সালে লন্ডনে পাড়ি জমান এবং এরপর আর দেশে ফেরেননি। অথচ চলতি মাসের ২৭ তারিখ দুপুরে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়িতে আগুন ও চালক হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
ওই মামলায় ছাত্রশিবিরের আরও ৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন থানার এসআই জহির উদ্দিন। মামলাটি দায়ের হয় গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিয়ানীবাজার থানায়।
শুধু দুলাল নন, একই ধরনের আরেক মামলায় প্রবাসে থাকা আরও তিনজন ছাত্রশিবির নেতাকে আসামি করা হয়েছে। বড়লেখা উপজেলা শিবিরের সাবেক সহ-সভাপতি জামিল আহমদকে ওই মামলায় ৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে— অথচ তিনি ২০১৭ সাল থেকে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন শিবিরের সহসভাপতি কামরুল আলম, যিনি ২০২২ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন, তাকে ৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আর একই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আফতার আহমদ, যিনি ২০২৪ সালের মার্চে কাতারে যান, তাকে ১০ নম্বর আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুধু এ কয়েকজন নন— এ ধরনের ‘গায়েবি মামলায়’ সিলেট বিভাগের অন্তত ৫৭ জন প্রবাসীর নাম এসেছে, যারা ঘটনার সময় বিদেশে অবস্থান করছিলেন।
ভুক্তভোগী প্রবাসীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ও হয়রানির আশঙ্কায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে প্রবাসী পরিবারগুলো চরম আতঙ্ক ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
কাতার প্রবাসী আফতার আহমদ বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছি। অথচ পুলিশ বলেছে, ঘটনার রাতে আমি দেয়ালে উস্কানিমূলক স্লোগান লিখেছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিকভাবে প্রণোদিত মামলা।”
স্পেন প্রবাসী শিবির নেতা ওমর উসমানী বলেন, “দুই বছর ধরে আমি প্রবাসে আছি। কোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমেও যুক্ত নই। তারপরও আমার নামে মামলা দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।”
লন্ডন প্রবাসী মাহবুব হাসান দুলালের সহকর্মীরা জানিয়েছেন, “তিনি দেশে না থেকেও যেভাবে মামলা পেলেন, তাতে প্রমাণ হয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এসব করা হচ্ছে।”
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম ফজলুল হক বলেন, “সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রশিবিরের পাঁচজন নেতাকর্মীর