বৃন্দা আচার্য্যঃঃ কখনো খেয়াল করেছেন, দাঁত ব্রাশ করার পরও দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে খাবার আটকে থাকে। অনেক সময় দুই দাঁতের মাঝে যে খাদ্যকণা আটকে থাকে, ভালো করে ব্রাশ করার পরও সেই খাদ্যকণা বের হয় না। ফলে দুই দাঁতের মাঝে গর্ত বা ক্যাভিটি হয়, যেটাকে আমরা ডেন্টাল ক্যারিজ বলি। এই ক্যারিজ শুধু এক্স-রে করলে ধরা পড়ে, খালি চোখে দেখা যায় না। তাই আটকে থাকা খাদ্যকণা বের করার জন্য ব্রাশের পাশাপাশি দরকার ডেন্টাল ফ্লস।
ডেন্টাল ফ্লস হলো একরকম পাতলা নাইলন ফিলামেন্টসের বান্ডিল অথবা প্লাস্টিক রিবন, যা দেখতে সুতার মতো। এটা জমে থাকা সূক্ষ্ম খাদ্যকণা পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। নিয়মিত ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করলে দাঁতের ক্ষয়, মাড়ির রোগ ও মুখের দুর্গন্ধ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহারের নিয়ম
প্রায় ১ ফুট পরিমাণ করে ফ্লস নিন। দুই আঙুলের মাঝে ২ ইঞ্চির মতো ফ্লস ফাঁকা রেখে দুই হাতের মধ্যমায় পেঁচিয়ে তা দুই দাঁতের ফাঁকে ঢুকিয়ে ‘C’ আকারে ধরুন। এরপর তা সাবধানে ওপরে-নিচে করে দাঁতের দিকে ঘষুন। পেছনের দাঁতসহ সব দাঁতের ফাঁকে ফ্লস করবেন।
প্রতিবার নতুন করে ফ্লস ব্যবহার করতে হবে।
দাঁতের মাড়িতে অতিরিক্ত চাপ দিয়ে বা জোরে ঘষে দাঁত ফ্লস করবেন না। এতে মাড়ি কেটে রক্তপাত হতে পারে।
দাঁত ব্রাশের আগে ফ্লস ব্যবহার করে ভালোভাবে কুলি করে নেবেন।
অনেকে দুই দাঁতের মাঝে আটকে থাকা খাদ্যকণা বের করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাঠি ব্যবহার করেন, যা উচিত নয়। কারণ কাঠির বারবার ব্যবহারের কারণে দুই দাঁতের মাঝখানে ফাঁকা জায়গা বেড়ে গিয়ে একধরনের পকেট তৈরি হয়। এটি পেরিওডেন্টাল পকেট নামে পরিচিত। এই পকেটে বারবার খাদ্যকণা ঢুকে দাঁতের পাশাপাশি মাড়িরও মারাত্মক ক্ষতি করে।
যেকোনো ফার্মেসি ও সুপারশপে ডেন্টাল ফ্লস কিনতে পাওয়া যায়। ডেন্টাল ফ্লস সুগন্ধিযুক্ত বা সুগন্ধিবিহীন, মোম মিশ্রিত বা মোমবিহীন হতে পারে। বর্তমানে ফ্লোরাইড মিশ্রিত ডেন্টাল ফ্লস পাওয়া যায়। ফ্লোরাইড মিশ্রিত ডেন্টাল ফ্লস দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকণা পরিষ্কার করার পাশাপাশি ফ্লোরাইডের প্রয়োজনও পূরণ করে। এ ছাড়া প্লাস্টিকের কিছু ফ্লসও কিনতে পাওয়া যায়। প্রকারভেদে ডেন্টাল ফ্লসের দাম পড়বে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।
বিএ/৩ ফেব্রুয়ারী