চলছে পবিত্র মাহে রমজান। মুসলিম হিসেবে আমরা সবাই রোজা রাখি। এ নিয়ে আমাদের রয়েছে ছোটবেলার অনেক মধুর স্মৃতি। ব্যতিক্রম নন তরুণ উদ্যোক্তা ও নাট্যকার এবং অভিনেতা সিলেট ফ্রিডম ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইমতিয়াজ কামরান তালুকদার। তেমনি কিছু অভিজ্ঞতা জানালেন তিনি। আর সবার মতো আমার ও আছে রোজা রাখার অনেক মজার স্মৃতি।যা ফেলে আসা শৈশবে পড়ে আছে সোনালি স্মৃতি হয়ে।প্রথম রোজা রাখি স্কুলে ক্লাস ৬ শ্রেণীতে পড়ার সময়।মা বলতেন শিশুদের দিনে দুটি রোজা হয় আর আমি পিচ্চি তাই দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাখলে ১টা রোজা হয়ে যাবে।পরে দুপুরে খেয়ে আবারও সন্ধ্যায় ইফতার করতাম। আর ভাবতাম আরেকটা রোজা হয়েছে। তখন না বুঝে খুব খুশি ছিলাম। এটা ভেবে যে আমি পরিবারের অন্য সদস্যদের চেয়ে বেশি রোজা রাখছি।প্রতিযোগীতা হতো রোজা রাখা নিয়ে। মা সেহরির সময় আমাকে ডাকতো না। এতো ছোট ছিলাম তাই। কিন্তু আমি কোনো না কোনো ভাবেই জেগে থাকার চেষ্টা করতাম।আর যেদিন ঘুম থেকে উঠতে না পারতাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে খুব কান্নাকাটি করতাম।আমার দাদি সকালে দুধ আর সিধ ডিম কলা খেতে বেশি চাপ সৃষ্টি করতেন।যাতে আমার এগুলা খেতে হবে।ইফতারে আগে আমার আম্মু যখন রান্না ঘরে গরম পিয়াঁজু তৈরি করতেন তখন আমি এগুলা হাতে নিয়ে বাসায় উঠানে হেঁটে হেঁটে খেতাম এখন মনে পরে।ছোটবেলায় বুঝতাম না,সেহরি কি,ইফতারি কি,রোজা কি। প্রথম ইফতার ও সেহরির কথা মনে নেই। তবে এটা মনে আছে সেহরির সময় মা ডাকতেন না। তখন অনেক শীতের সময় রমজান মাস থাকতো।আর সকালে উঠে কান্না কাটি করতাম।ছোটবেলায় ও বড়বেলার রমজানে কী পার্থক্য যতটুকু মনে পড়ে ছোটবেলা খুব ঘুম পাগল ছিলাম। তাই সেহরির জন্য রাত ২টা থেকে ডাকা শুধু করতেন বাবা। আগে রমজান মাস শুরু হতো ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে তখন তো পুরোপুরি শীতকাল।তাই সেসব ফেলা আসা দিনগুলো এখন খুব মিস করি।এবারের রমজান উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনা আল্লাহর কাছে। আমার তো পাপী বান্দা,এখন শুধু একটা প্রার্থনা সবার প্রাণ ভিক্ষা চাই।করোনা মুক্ত দেশ এবং পৃথিবীর চাই।করোনায় ঘরবন্দী দিনগুলো জানি না সামনে কি দিন অপেক্ষা করছে। আপাতত বাড়িতেই আছি এবং আলহামদুলিল্লাহ্ সুস্থ আছি। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে কতটা সুস্থ আছি এবং সামনে থাকব,বুঝতে পারছি না। সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে কাটাচ্ছি,কারণ কাউকে এই যুদ্ধে হারাতে চাই না।এত অবসর সময় আগে কখনো পাইনি।প্রকৃতি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে দিচ্ছে।আমরা কোনো কিছুই আটকে রাখতে পারছি না।পরিবারকে ভালোভাবে সময় দিচ্ছি,বন্ধুদের খোঁজ নিচ্ছি,বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে ভিডিওকলে আড্ডা দিচ্ছি, নতুন নতুন রেসিপি রান্না করছি,অনেক সিনেমা ও নাটক দেখছি, নিজের সাথেও সময় কাটাচ্ছি। নিজের সামর্থ্যনুযায়ী সমাজের অসহায় গরীব মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী যতটুকুই পারছি,সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।ব্যক্তিগত উদ্যোগে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন।এ পর্যন্ত প্রায় ১৩শত পরিবারের মাঝে।তবে যারা আমাদের সুস্থতা এবং সব ধরনের সহযোগিতা করার জন্যে এই করোনাযুদ্ধে বাড়ির বাইরে আছেন,তাদের স্যালুট জানাই।আপনাদের সবার প্রতি ভীষণ শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।