বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের আমীন ফার্মেসীর স্বত্ত¡াধিকারী রুহুল আমীন চৌধুরীর অপচিকিৎসায় জায়েদা বেগম ৫টি দাত হারিয়ে বর্তমানে কঠিন যন্ত্রনায় ভোগছেন। একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি তিনি। এব্যাপারে ভুক্তভোগী জায়েদা বেগম এর স্বামী আব্দুল খালিক সিলেটের সিভিল সার্জন, বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিশ্বনাথ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের বিবিদইল গ্রামের আব্দুল খালিক গত মে মাসে দাতের চিকিৎসা করাতে তার জায়েদা বেগমকে নিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরস্থ আব্দুল খালিক সুপার মার্কেটের আমীন ফার্মেসী এন্ড ডেন্টাল কেয়ারে নিয়ে যান। ফার্মেসীর স্বত্ত¡াধিকারী রুহুল আমীন চৌধুরী তৎক্ষনাৎ জায়েদা বেগম এর দাত চেক করে এবং রোট ক্যানেল করে দেন। যা ৬মাস যেতে না যেতেই দাতের ক্যাপ খুলে যায়। এরপর যখন আব্দুল খালিক আবার তার স্ত্রীকে নিয়ে যান তখন রুহুল আমীন দাতের ক্যাপ রেখে দু’দিন পরে যাওয়ার কথা বলে। তার কথামতে দু’দিন পরে জায়েদা বেগমকে আমীন ফার্মেসীতে নিয়ে গেলে রুহুল আমীন এক্সরে করে দু’টি দাত ক্ষয় হয়েছে বলে জানিয়ে এগুলো খুলে ফেলার জন্য জায়েদা বেগম এর মুখ অবশ করে পাঁচটি দাত তুলে ফেলে এবং রোট ক্যানেল করার জন্য আটটি দাত ছিদ্র করে ফেলে। এ সময় সাময়িক কিছু ঔষুধ দিলেও বাড়ীতে আসার পর থেকেই জায়েদা বেগম এর দাতের ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠে। এসময় আব্দুল খালিক দাতের যন্ত্রনায় অস্থির জায়েদা বেগমকে নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। দীর্ঘ পনের দিন চিকিৎসা গ্রহণ করলেও জায়েদা বেগম এখনও দাতের যন্ত্রনায় অস্থির।
নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রুহুল আমীন ভাল দাত গুলো ফেলে দিয়েছে এবং অন্যান্য দাতগুলোতে ছিদ্র করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় এই দাতের গোড়া থেকে ক্যান্সার সহ বিভিন্ন মরণব্যাধী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আব্দুল খালিক অনেক টাকা খরছ করেও স্ত্রীকে পুরোপুরি সুস্থ করতে না পারায় তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে কোন রকম সার্টিফিকেট ছাড়া দীর্ঘদিন যাবত ফার্মেসী দিয়ে দন্ত চিকিৎসা চালিয়ে গেলেও তার ব্যাপারে প্রশাসনিক কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে তার মত ভূয়া সার্টিফিকেট বিহীন চিকিৎসকের কবলে পরে শুধু আব্দুল খালিক নয় বহুলোক প্রতারিত ও আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। আব্দুল খালিক সার্টিফিকেট বিহীন রুহুল আমীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রসাশনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এব্যাপারে আলাপকালে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম মুসা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে রুহুল আমীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্ণালী পাল বলেন, অভিযোগটি ইতিমধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডাঃ প্রেমানন্দ মন্ডল আলাপকালে জানান, অভিযোগের ব্যাপারে খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।