সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের সাথে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কার্যালয় কর্মকর্তাবৃন্দের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতবিনিময়কালে চেম্বার নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্য বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মত নয়। এখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কিছু কারখানা আছে। কিন্তু তেমন বৃহৎ কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই। তাই শ্রম আইনের সকল ধারা সিলেটে প্রযোজ্য নয়। সিলেটের ব্যবসায়ীরা শান্তিপ্রিয় এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।  বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই শ্রম আইন সম্পর্কে ততটা অবগত নন।

সোমবার বিকেল ৩টায় নগরের জেলরোডে সিলেট চেম্বার ভবনের কনফারেন্সহলে চেম্বার সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কার্যালয়ের উপ-মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) তপন বিকাশ তঞ্চঙ্গাঁ বলেন, সরকারের শ্রম আইন অনুযায়ী কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে শ্রমিকের নিরাপত্তা বিধান ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকরনে আমরা কাজ করছি। ব্যবসায়ী ও কলকারখানা মালিকদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে শ্রমিকের কল্যাণে কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে শ্রমিকদেরকে যেরকম মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে, আমাদের দেশে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়না। শ্রমিকদের যথাযথ মূল্যায়ন হলে দেশে যেমন উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে তেমনি বহির্বিশ্বেও সুনাম বাড়বে। তিনি শ্রমিকের অধিকার রক্ষা ও শ্রম আইন বাস্তবায়নে সিলেট চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন। চেম্বার সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, সিলেটে শ্রম আইন প্রয়োগের পূর্বে ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্ট আইন সম্পর্কে অবগত করার আহবান জানান। এছাড়াও তিনি সিলেটকে পর্যটন নগরী বিবেচনায় দোকানপাটসমূহকে সপ্তাহিক বন্ধের ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি প্রতিষ্ঠান মালিকদের সুবিধার্থে সিলেটে লেবার কোর্ট দ্রুত স্থাপন করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন।

সভায় বক্তাগণ শুক্রবারে এলাকাভিত্তিক কিছু কিছু দোকান খোলা রাখা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের লাইসেন্স প্রাপ্তি সহজীকরণ, রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা ঘন ঘন চাকুরী পরিবর্তন করে বিধায় রেস্টুরেন্টগুলোর জন্য আইন-কানুন শিথিলকরণ, ছোট ছোট দোকানকে শ্রম আইন থেকে অব্যাহতি প্রদান, নতুন আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রচারণার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের অবহিতকরণ, ব্যবসায়ীদের সাথে সম্মানজনক আচরণ, ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে আলোচনা ব্যতিরেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর মামলা না করাসহ বিভিন্ন দাবী-দাওয়া তুলে ধরেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বাবুল, আলীমুল এহছান চৌধুরী, মো. আমিনুজ্জামান জোয়াহির, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, সালেহীন এফ. নাহিয়ান, সাবেক সহ সভাপতি মো. দিলওয়ার হোসেন, প্রতিষ্ঠান মালিক ছালেহ আহমদ চৌধুরী, খালেদ আহমদ, নিহার কুমার রায়, মো. সামছুল আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো. মামুন কিবরিয়া সুমন, মো. সাহিদুর রহমান, মো. আব্দুর রহমান (জামিল), ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী (রাজিব), প্রতিষ্ঠান মালিক তাহমিদুল হাসান জাবেদ, মো. নুরুজ্জামান সিদ্দিকী, হোসেন আহমদ, আব্দুল আহাদ, মো. নূরুল আলম, রতন তালুকদার, মো. শাহজাহান মিয়া, রাজু চৌধুরী, মো. শাহনুর নিয়াজী, ফয়ছল আহমেদ আলী, মো. নজরুল ইসলাম, অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম, শিউলি বিশ্বাস প্রমুখ।

এদিকে এরপর বিকেল ৫টায় একই স্থানে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের সাথে সিলেট জেলা ভোগ্যপণ্য পরিবেশক গ্রুপের পৃথক আরেকটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভাটিও চেম্বার সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভোগ্যপণ্য পরিবেশক গ্রুপের সভাপতি মো. বদরুল আলম মজনু বলেন, সিলেট জেলা ভোগ্যপণ্য পরিবেশক গ্রুপ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত একটি সংগঠন। সংগঠনটি প্রায় ২১ বছর ধরে সিলেটের ভোগ্যপণ্য পরিবেশকদের কল্যাণে কাজ করছে। ইদানিং পরিবেশকগণ ভ্যাট সংক্রান্ত কিছু জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন। তিনি এ ব্যাপারে সিলেট চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন। গ্রুপের সেক্রেটারি ও সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো. আমিনুজ্জামান জোয়াহির ভ্যাটসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সিলেট চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন। চেম্বার সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। ব্যবসায়ীদের দেয়া ভ্যাট, ট্যাক্স ও অন্যান্য রাজস্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। তাই ব্যবসায়ীদের উপর চাপ সৃষ্টি করে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

ইতোপূর্বেও ব্যবসায়ীগণ ভ্যাট সংক্রান্ত অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন, যা সিলেট চেম্বারের উদ্যোগে সমাধান হয়েছে। আশা করি ভোগ্যপণ্য পরিবেশকগণের সমস্যাও সমাধান হবে। তিনি উৎপাদনকারী বা আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সমুদয় ভ্যাট আদায়ের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার আশ্বাস প্রদান করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, মো. সাহিদুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী (রাজিব), মো. আমিনুজ্জামান জোয়াহির, ফখর উস সালেহীন নাহিয়ান, সাবেক পরিচালক মো. ফজলুর রশীদ চৌধুরী ও সিলেট জেলা ভোগ্যপণ্য পরিবেশক গ্রুপের সদস্যবৃন্দ।